
সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার- জাহারুল ইসলাম জীবন
এর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন
মেহেরপুর জেলার সমগ্র গ্রাম সহ গোটা বাংলাদেশ আজ মাদকের ভয়াবহ ছোবলে জর্জরিত। এই সর্বনাশা মাদক যুবসমাজকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে, তছনছ করে দিচ্ছে অগণিত পরিবারের স্বপ্ন।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে দেশের বর্তমান আইন শৃঙ্খলার চরম ক্রান্তিলগ্নে সমগ্র বাংলাদেশের পাশাপাশী মেহেরপুর জেলার সমস্ত গ্রাম ও শহর সহ মাদকের মাদার হাউজ ক্ষেত মেহেরপুর শহর ও আমঝূপী গ্রামের চিত্রও অত্যান্ত ভয়াবহ। এখানে মাদকের সহজলভ্যতা উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। অত্র জেলার সমস্ত গ্রামের আনাচে-কানাচে অবাধে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। উঠতি বয়স থেকে শুরু করে মধ্যবয়স্ক অনেকেই এই মাদকের মরণ নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছে এবং এর হার ক্রমেই ক্রমবর্ধমান।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য ও কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও রাজনৈতিক মহলের ছত্রছায়ায় মাদক ব্যবসা চলছে দেদারসে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক সচেতন ব্যক্তিদের অভিযোগ প্রশাসনের সাথে যোগসাজশেই নাকি চলছে এই অবৈধ মাদক ব্যবসা।
স্থানীয় জনগণের অভিযোগ, মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস কারো নেই, যাহার কারণে অভিভাবক সহ সাধারণ জনগণ বরাবরের মতে নির্বিকার ও অসহায়, কারণ তারা অত্যন্ত প্রভাবশালী এবং তাদের হাত অনেক বড় লম্বা। এ-ই বিষয়ে অভিভাবক সহ সাধারণ জনগণ তাদের নিজের সন্তানদের নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন।
স্পষ্টতোই প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও উঠছে নানা প্রশ্ন ও অভিযোগ। অবিভাবক সহ সাধারন জনগণের অভিযোগ যে, পুলিশ মাঝে মধ্যে নামমাত্র কিছু মাদকসেবীকে গ্রেফতার করে তাদের দায়িত্ব সারে। মূল মাদক ব্যবসায়ীরা সবসময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসিক মাসোহারা নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
মাদকের ভয়াবহতা শুধু একটি গ্রাম বা শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি একটি জাতীয় সমস্যা। মাদকাসক্তির কারণে যুবসমাজ প্রতিনিয়তই বিপথে চলে যাচ্ছে, সংক্রামণের মতো বাড়ছে নানামূর্খী অপরাধ প্রবণতা। অনেক পরিবার সর্বস্বান্ত হয়ে যাচ্ছে, ভেঙে যাচ্ছে সামাজিক বন্ধন। দেখা দিচ্ছে জনস্বাস্থ্য ও সামাজিক চরম অবক্ষয়। জনস্বাস্থ্য ও সামাজিকতা রক্ষার্থে এই মাদকের কুড়াল গ্রাসের থাবা থেকে দেশ ও দেশের যুব সমাজ সহ নিজ নিজ পরিবারকে বাঁচাতে সম্মিলিত ভাবে জনসচেতনতা লক্ষ্যে দেশের সুধী সমাজ ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জিরো টলারেন্স নিতিতে জরুরী ভিত্তিতে অগ্রণী ভূমিকায় পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিৎ এবং এখানে জনস্বাস্থ্য ও সামাজিকতার গুরুত্ব এবং ভূমিকা অপরিসীম।
এই সমস্যার সমাধানে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ,উদ্যোগ সমূহের মধ্যে কিছু অপরিসীম পদক্ষেপ গ্রহন করা প্রয়োজন বলে সকলেই মনে করেন তাহা হলোঃ
প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে এবং মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
জনগণকে সচেতন করতে হবে এবং মাদকদ্রব্যের কুফল সম্পর্কে জানাতে হবে।
সামাজিক ও পারিবারিকভাবে মাদকাসক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
মাদকাসক্তদের পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
মাদকের এই ভয়াবহতা রুখতে এখনই জরুরী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে সুধী সমাজ মনে করে, অন্যথায় আমাদের দেশ ও সমাজের অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী আগামীর প্রজন্ম, দেশ গঠনের ভবিষ্যৎ স্বপ্নায়নের কারিগর এ-ই দেশের যুবসমাজ ধ্বংসের মুখে পতিত হয়ে সমগ্র দেশ ও দেশের সমাজ হয়ে উঠবে মাতাল নগরী নিষিদ্ধ বাসিন্দা রূপে, যাহার আশাশুনি সংকেত রুপে দেখা দেবে আগামী ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায়নের প্রজম্ম চিত্রের জন্য মহাবিপদ সংকেত!