বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস

মোঃআব্দুল আলিম (ব্যুরো অফিস) রংপুরঃ

আজ ৮ মার্চ, বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। লিঙ্গবৈষম্য দূর করে নারীর প্রতি সম্মান, সমানাধিকার ও ক্ষমতায়নের বার্তা ছড়িয়ে দিতে প্রতিবছর এই দিনটি উদযাপন করা হয়। ১৯৭৫ সাল থেকে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পেয়ে বিশ্বব্যাপী নারী দিবস পালনের রীতি চলে আসছে। তবে এর ইতিহাস আরও পুরনো, যা নারী শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের সঙ্গে জড়িত।

নারী দিবসের ইতিহাস
নারী দিবসের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস। ১৮৫৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সুতা কারখানার নারী শ্রমিকরা মজুরিবৈষম্য, দীর্ঘ কর্মঘণ্টা এবং অমানবিক কাজের পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন। তাদের এই আন্দোলন রক্তাক্ত হয় সরকারি বাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে।

১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের আয়োজনে প্রথম নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের প্রস্তাবনায় ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯১১ সাল থেকে বিভিন্ন দেশে নারীর সম-অধিকার দিবস হিসেবে এই দিনটি পালিত হতে শুরু করে।

বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা লাভের আগে থেকেই নারী দিবস পালনের tradition চলে আসছে। ১৯৭৫ সালে জাতিসংঘ ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং বিশ্বব্যাপী এর উদযাপনের আহ্বান জানায়।

নারী দিবসের তাৎপর্যঃ
আন্তর্জাতিক নারী দিবস নারীর অর্জন, সংগ্রাম ও সমানাধিকারের প্রতীক। এই দিনটি নারীর শিক্ষা, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ এবং সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সচেতনতা তৈরি করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নারী দিবস উদযাপনের রীতি ভিন্ন। কোথাও নারীর প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করা হয়, আবার কোথাও নারীর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের বিষয়টি প্রাধান্য পায়।

এ বছর নারী দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’। এই প্রতিপাদ্যের মাধ্যমে নারীর সমঅধিকার ও ক্ষমতায়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশে নারী দিবস
বাংলাদেশেও যথাযথ মর্যাদায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নানা অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচির মাধ্যমে নারীর অর্জন ও চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরা হচ্ছে। নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই দিনটি বাংলাদেশেও বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।

নারী দিবস শুধু একটি উদযাপনের দিন নয়, এটি নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামেরও একটি প্রতীক। এই দিনে নারীর অর্জনকে সম্মান জানানোর পাশাপাশি লিঙ্গবৈষম্য দূর করার অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *