মাদরাসার ছাত্রদেরকে লক্ষ্য করে হযরত মাওলানা আবু তাহের মিসবাহ একটি বয়ান করেছিলেন


সোহেল রানা সদর উপজেলা প্রতিনিধি

খুব সংক্ষেপে, কিন্তু অতি দরদের সাথে তিনি মোবাইলের কুফল তুলে ধরেছেন। আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক তালিবুল ইলমকে সতর্ক হওয়ার তাওফীক দান করুন। আমীন। এবয়ানে মাদরাসার ছাত্রদের সম্পর্কে যে আশা ও আবেগ প্রকাশ করেছেন আল্লাহ তাআলালা সকল ছাত্রদেরকে বুঝার তাওফিক দান করুন। আমীন।

কিছু কিছু জিনিস আছে নিছক আইনের বিচারে দেখলে জায়েয, কিন্তু যাদের অন্তর্দৃষ্টি আছে তারা সেটার মধ্যেও অন্ধকার দেখতে পান। জাওয়ালের (মোবাইল ফোন) বিষয়ে আমার খুব আশঙ্কা হয়। দাওরাতুল হাদীস এবং তাখাসসুস পর্যন্ত তালিবুল ইলমের ভিত্তির যমানা। এই যমানায় যার হাতে জাওয়াল আসবে আমি কসম করে বলতে পারি, সে ইলম থেকে মাহরুম হতে পারে। যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয় এটা কি জায়েয নয়, আমি বলব, প্রয়োজনের ক্ষেত্রে জায়েয।

একটা দৃষ্টান্ত মনে পড়ছে। আমি একজনকে দেখেছিলাম, রাস্তায় দাঁড়িয়ে একটা কলার খোসা পুরোটা ফেলে দিয়ে কলাটা হাতে নিয়ে খাচ্ছে। এটা জায়েয, কিন্তু এই খানাতে কলবের মধ্যে অন্ধকার পয়দা হবে। এই খানার কারণে কলব থেকে ইলমের নূর বিদায় হয়ে যাবে।

তালিবুল ইলমের ভিত্তির যমানায় জাওয়ালকে( মোবাইল ফোন) কালসাপের মতো ভয় করতে হবে। এটার সুবিধার যত দিক আছে, সমস্ত দিক থেকে চোখ বন্ধ করে রাখতে হবে। অন্তত যারা এটা পারবে না তারা যেন মাদরাসায় ভর্তি না হয়। কেননা তা আরো ভয়ের কারণ, আরো আশঙ্কার কারণ। এমন প্রতিষ্ঠানও থাকতে পারে যেখানে হয়ত মোবাইলের উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা নেই, সেখানে হয়ত তোমার এত বেশি ক্ষতি হবে না। ক্ষতির পরিমাণ অনেক কমে যাবে। আর যেখানে তোমার কাছে জাওয়াল আছে শুনলে জিম্মাদারের দিলে ক্ষত সৃষ্টি হয় ঐখানে তুমি দাখেলা নিয়ো না। আমি এটা খুব হামদরদীর সাথে বুঝানোর চেষ্টা করি। যখন জানতে পারি যে, কারো কাছে জাওয়াল আছে তখন বলি, তুমি এখান থেকে চলে যাও। তোমাকে দেখলেই আমার কষ্ট হবে। তুমি এখনো আছ এটা বারবার মনে পড়বে, মনে পড়লে আমার কষ্ট হবে। এই কষ্টটা তোমার জন্য ক্ষতিকর।

জাওয়াল তোমার পকেটে থাকবে, তোমার সুন্দুকে থাকবে, তোমার কানে লাগানো থাকবে, আর তোমাকে ছোবল দিতে থাকবে-এটা ব্যক্তি এং প্রতিষ্ঠানের সর্বনাশের বিষয়। এটা থেকে নিজেকে পাক করে ফেলো, সাফ করে ফেলো। যদি না পারো, তাহলে এখান থেকে বিদায় হয়ে যাও, যেন ক্ষতির পরিমাণ কমে যায়। তবে আমি সাবধান করে দিচ্ছি, যেখানে থেকেই ব্যবহার করো ক্ষতি হবেই। টুপি কোর্তার আলেম হয়ে যাবে। মজলিসে বসলে বাহ্যিক কোনো ফরক থাকবে না। ও-ও আলিম, এ-ও আলিম। কিন্তু একজন টুপি কোর্তার আলিম, আরেকজন ইলমের আলিম। কিন্তু এখানে থাকলে যিন্দেগীটা বরবাদ হয়ে যাবে। কারণ মাদরাসার একটা নিজস্ব তবিয়ত আছে, উসলূব ও আন্দায আছে। তা রক্ষা না করলে তোমার ক্ষতি হবে।

আর কেউ যদি এখানে আদব রক্ষা করে চলতে পারে, আমি আল্লাহর রহমতের কাছে আশা করি যে, সে হিমালয়ের উচ্চতায় পৌঁছে যেতে পারবে। আমি আল্লাহর রহমতের কাছে আশা করি যে, মাদরাসার ফারেগীনদের এই যমানার মানুষের চোখে চোখ রেখে কথা বলার যোগ্যতা অর্জন হবে।

আল্লাহ তোমাদের প্রত্যেককে আমার চেয়ে বহু বহু গুণ বড় ও ভালো তালিবুল ইলম বানিয়ে দিন। ‘আলিম’ বানিয়ে দেন বলিনি। কারণ আমি আলিম না, তালিবুল ইলম। আর একটা কথা আমরা যেন বেয়াদব না হয়, উস্তাদ যেন আমাদেরকে বেয়াদব না বলে। করণ বেয়াদব প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতিকর ব্যক্তির জন্য ক্ষতিকর।প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের জন্য একটা বেয়াদব ছাত্রই যথেষ্ট। আল্লাহ তায়ালা সকলকে সঠিক বুঝ দান করুক।আমীন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *