চাঞ্চলকর ক্লুলেস তারা মিয়া হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও ০৪(চার) জন আসামী গ্রেফতার

রিপোর্টার ঃ মোঃ আব্দুল আউয়াল খান
কেন্দুয়া, নেএকোনা

ভিকটিম তারা মিয়া ফকির (৬২), পিতা- মৃত আইয়ুব আলী, সাং- ওয়াই, ইউপি- গড়াডোবা, থানা- কেন্দুয়া, জেলা-নেত্রকোনা কেন্দুয়া থানাধীন বাসাটী বাজারে কাঁচামালের ব্যবসা করতেন। তিনি প্রতিদিন বিকাল অনুমান ০৩.০০ ঘটিকার সময় দোকানে যেতেন এবং রাত অনুমান ১০.৩০ ঘটিকার মধ্যে দোকান বন্ধ করে বাড়ীতে ফেরত আসতেন। গত ২১-০৩-২০২৫ খ্রিঃ তারিখ রাত অনুমান ০৯.১৫ ঘটিকার সময় ভিকটিম দোকান বন্ধ করে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা হন। ভিকটিম বাড়ীতে ফেরত না আসায় বাদীর পরিবারের লোকজন রমজান মাসের সেহেরী খাওয়ার পর ভিকটিমকে খোঁজাখুজি করা অবস্থায় গত ২২-০৩-২০২৫ খ্রিঃ সকাল অনুমান ০৬:০০ ঘটিকার সময় কেন্দুয়া থানাধীন গড়াডোবা ইউনিয়নের অর্ন্তগত কাটাহুসিয়া সাকিনস্থ সাতারখালী ব্রীজের উত্তর-পশ্চিম পাশে অনুমান ৫০ গজ উত্তর দিকে সাতারখালী খালে ভিকটিমের লাশ খুঁজে পায়। অজ্ঞাতনামা বিবাদী/বিবাদীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে একই উদ্দেশ্যে ঘটনার তারিখ ও সময়ের মধ্যে যেকোন সময় ভিকটিম তারা মিয়া ফকির (৬২) কে ধারালো অস্ত্রাদি দ্বারা মাথায়, মুখে আঘাত করে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে খালে ফেলে রেখে যায় ।উক্ত রুপ অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে কেন্দুয়া থানার মামলা নং-২৫, তারিখ: ২৩/০৩/২০২৫ খ্রি:, ধারা: ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়। উক্ত মামলা রুজু করার পর হইতে তদন্তে নামে কেন্দুয়া থানা পুলিশ। 

 মামলাটির তদন্তকার্য চলাকালীন সময়ে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে তদন্তে প্রাপ্ত সন্দিগ্ধ আসামী মোঃ শামীম মিয়া (২৫), পিতা-আজিজুল হক, সাং-কাটাহুসিয়া, থানা-কেন্দুয়া, জেলা-নেত্রকোনাকে বিগত ১১/০৪/২০২৫ খ্রিঃ কেন্দুয়া থানাধীন ওয়াই গ্রামে তার শ্বশুরবাড়ী হইতে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোর্পদ করা হয়। পরবর্তী অধিক তদন্ত ও মামলার রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে উক্ত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিজ্ঞ আদালতে রিমান্ডের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত তার ০২ (দুই) দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে অপর আসামী মোঃ আফজাল হোসেন (২৪), পিতা-মোঃ নয়ন মিয়া, গ্রাম-ওয়াই উত্তর পাড়া, থানা-কেন্দুয়া, জেলা-নেত্রকোণাকে ইং-১৭/০৪/২০২৫ খ্রিঃ কেন্দুয়া থানাধীন জল্লী গ্রাম হতে স্থানীয় লোকজনদের সহায়তায় গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হলে আসামী মোঃ আফজাল হোসেন (২৪) ম্যাজিস্ট্রেট এর নিকট ঘটনার দায় স্বীকার করে ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। আসামী আফজালের দেওয়া তথ্যের প্রেক্ষিতে উক্ত মামলার সহিত জড়িত অপর আসামী মোঃ সজল মিয়া (২০), পিতা-জুলহাস মিয়া, গ্রাম: ওয়াই, থানা-কেন্দুয়া, জেলা-নেত্রকোণাকে কেন্দুয়া থানাধীন বলাইশিমুল ইউনিয়নের অর্ন্তগত কবিচন্দ্রপুর গ্রামে তার শ্বশুরবাড়ী হতে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে মাননীয় পুলিশ সুপার নেত্রকোণা মহোদয়ের নির্দেশে জেলা গোয়েন্দা শাখা(ডিবি )নেত্রকোণার সহযোগীতায় মামলার ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামী মোঃ রিয়াজ (২০), পিতা-মোঃ জাবেদ মিয়া, সাং-ওয়াই উত্তরপাড়া বন্দেরবাড়ী, থানা-কেন্দুয়া, জেলা-নেত্রকোণাকে ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। উক্ত আসামিদের ইং-১৮/০৪/২০২৫ খ্রিঃ উক্ত আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়। 

মামলাটির প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, তারা মিয়া হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামীরা প্রত্যেকেই নেশার সাথে জড়িত। আসামীরা উপরোক্ত ঘটনাস্থলের পাশে একটি কালভার্টে বসে প্রায় সময়ই মাদক সেবন করতো। মৃত তারা মিয়া একজন প্রতিবাদী প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। তিনি উক্ত রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের পথে বিভিন্ন সময় আসামীদের নেশা করা অবস্থায় দেখতে পেয়ে নেশা না করার জন্য বলতেন এবং মাঝেমধ্যে বকাঝকা করতেন। এতে আসামীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ভিকটিম তারা মিয়াকে খুন করার পরিকল্পনা করে এবং ঘটনার দিন, তারিখ ও সময়ে অর্থ্যাৎ গত ২১-০৩-২০২৫ খ্রিঃ তারিখ রাত অনুমান ০৯.৩০ ঘটিকায় আসামীরা ভিকটিম তারা মিয়াকে পেয়ে তার ব্যবসায়ের টাকা ছিনাইয়া নেয় এবং কেন্দুয়া থানাধীন গড়াডোবা ইউনিয়নের অর্ন্তগত কাটাহুসিয়া সাকিনস্থ সাতারখালী ব্রীজের উত্তর-পশ্চিম পাশে ধারালো অস্ত্রাদি দ্বারা মাথায়, মুখে আঘাত করে হত্যা করে ও লাশ গুম করার জন্য সাতারখালী খালে ভিকটিমের লাশ ফেলে দেয়।

মোঃ আব্দুল আউয়াল খান
০১৭৭৭৮৪৮৪১৩

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *