
নিজস্ব প্রতিবেদক:
নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার মাউলীগ্রামে চলছে ঐতিহ্যবাহী ‘বুড়ির মেলা’ — দুই শতাব্দীর ইতিহাস আর সংস্কৃতির সাক্ষী এই মেলা এখনো একই উন্মাদনায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রতিবছর।
বাংলা বছরের প্রথম মাস বৈশাখের দ্বিতীয় সপ্তাহে আয়োজিত এই মেলা স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘বুড়ির মেলা’ নামে। জনশ্রুতি অনুযায়ী, প্রায় ২০০ বছর আগে এই গ্রামে এক বৃদ্ধা রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন। সেই ঘটনার স্মরণে ও তাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় এই মেলা। গ্রামের মানুষের বিশ্বাস, সেই ‘বুড়ি’ ছিলেন এক অলৌকিক শক্তির অধিকারী এবং তিনি আজও গ্রামবাসীর মঙ্গল করেন।
মেলাকে ঘিরে তৈরি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশ —
🎡 নাগরদোলা, বাঁশ ও মাটির খেলনা, গ্রামীণ হস্তশিল্প,
🍬 মোয়া, নাড়ু, পিঠাপুলি, ও নানা রকম দেশীয় মিষ্টান্ন,
🎭 লোকজ গান, যাত্রাপালা ও পথনাটক — সব মিলিয়ে মাউলীগ্রাম হয়ে ওঠে এক ঐতিহ্যের মিলনমেলা।
দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেন এই মেলায় অংশ নিতে। কেউ আসেন শুধুই পুরনো স্মৃতি রোমন্থনে, কেউবা আসেন নতুন প্রজন্মকে গ্রামীণ সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করাতে।
একজন বৃদ্ধ গ্রামবাসী আবেগ ভরা কণ্ঠে বললেন,
“আমার দাদারাও এই মেলায় আসতেন। এখন আমার নাতিও আসে। এই মেলা আমাদের রক্তে।”
স্থানীয় প্রশাসনও মেলার সার্বিক নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনায় সজাগ রয়েছে। রয়েছে অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প, শিশুদের জন্য নিরাপদ খেলার জায়গা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপর উপস্থিতি।
বুড়ির মেলা শুধু একটি উৎসব নয়, এটি একটি ঐতিহ্য, একটি বিশ্বাস, আর মাউলীগ্রামের আত্মার অংশ।