
জেলা প্রতিনিধি:রাকিবুল ইসলাম মিঠু।
রাজশাহীর তানোরে তালিমুন নেসা বালিকা হাফেজিয়া মাদ্রাসার ১৩ বছরের নাবালক শিক্ষার্থীকে নিয়ে উধাও হয়েছেন ওই মাদ্রাসার হাফেজ মাওলানা মোতাহার মন্ডল বলে নিশ্চিত করেন স্থানীয়রা। সে ওই মাদ্রাসার পরিচালক ও শিক্ষক । তানোর পৌর সদর এলাকার আমশো মথুরাপুর গ্রামে অবস্থিত মাদ্রাসা । শিক্ষক হাফেজ মোতাহারের বাড়ি আমশো তাতিয়াল পাড়ায়। সে তজরুল ইসলামের ছেলে।
গত সোমবার সন্ধ্যার দিকে মাদ্রাসা থেকে উধাও হওয়ার ঘটনা ঘটে। সারা রাত দুজনে শহরের হোটেলে ছিল বলে স্থানীয়রা নিশ্চিত করেন। এখবর ছড়িয়ে পড়লে দুই সন্তানের জনক হাফেজ শিক্ষক মোতাহারের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন গ্রামবাসী। বর্তমানে ঘটনাটি টক অব দ্যা তানোরে পরিনত হয়ে পড়েছে। হাফেজ নামের কলঙধারীর এমন কর্মকান্ডে চরম বিব্রত অভিভাবক মহল। তবে ঘটনাটি রফাদফা করতে মরিয়া শিক্ষককের সহযোগীরা বলেও অভিযোগ উঠেছে।ওই হাফেজ নামের শিক্ষকের কাছে নিজেদের মেয়েকে আর নিরাপদ মনে করছেন না অভিভাবক মহল ও গ্রামের জনসাধারণ। ফলে হাফেজ নামের শিক্ষক কে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মুলুক শাস্তির দাবি মেয়ের পরিবারসহ গ্রামবাসী ও অভিভাবক মহলের। যাতে করে এমন ন্যাক্কার জনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, চলতি মাসের ২১ এপ্রিল সোমবার নানা প্রলোভন দেখিয়ে তালিমুন নিসা বালিকা মাদ্রাসার নাবালক শিক্ষার্থীকে নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মোতাহার হোসেন। সারা রাত শিক্ষক ও ওই শিক্ষার্থী মাদ্রাসায় না আসায় পরদিন মঙ্গলবার সকাল থেকেই শুরু হয় খোঁজাখুজি। এরই এক পর্যায়ে উভয়ের অভিভাবক জানতে পারেন মঙ্গলবার সকালে লম্পট হাফেজ ও নাবালক শিক্ষার্থীকে নিয়ে তার খালার বাড়ি কামারগাঁ ইউপির ছাঐড় হরিপুর গ্রামে আছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে উভয়ের অভিভাবক গিয়ে হাফেজ ও নাবালক শিক্ষার্থীকে এনে হাফেজের বাড়িতে রাখেন। রাত কাটানোর পর পরদিন ২৩ এপ্রিল বুধবার ওই শিক্ষার্থীর পিতাসহ গ্রামের লোকজন হাফেজ মোতাহারের বাড়িতে গিয়ে শিক্ষার্থীকে নিয়ে আসেন। সেখানেই মেয়ের পিতা সবাইকে জানায় আমার মেয়ের কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
গ্রামের লোকজন জানান, হাফেজ শিক্ষক মোতাহার দীর্ঘ দিন ধরে নাবালক শিক্ষার্থীদের শরীরসহ স্পর্শ কাতর জায়গায় হাত দিয়ে থাকে এমন অভিযোগ অনেক আগের। কিন্তু বিশ্বাস হত না। নাবালক শিক্ষার্থীকে নিয়ে পালিয়ে যাবার পর সবাই হতবাক। কারন শিক্ষক বিবাহিত। তার সংসারে ৪০ দিনের এক ছেলে ও সাড়ে চার বছরের এক মেয়ে রয়েছে। তারপরও কিভাবে নাবালক শিক্ষার্থীকে নিয়ে পালিয়ে যায়। আসলে সে নারীলিপ্সুক, নারীলোভী, এদেরকে সমাজচ্যুত থেকে শুরু করে যত রকমের শাস্তি আছে দেয়া দরকার। কারন নিজ মাদ্রাসার শিক্ষার্থী যখন হাফেজ শিক্ষকের কাছে নিরাপদ না, তাহলে বুঝতে হবে কি ধরনের চরিত্র তাঁর। অবশ্যই সে ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেছে, পরিক্ষা করলেই ধরা পড়বে। মেয়ের পরিবার যদি টাকার বিনিময়ে রফাদফা করে আমরা গ্রামের লোকজন তাকে শাস্তি দিব। আমরা চাই নাবালক শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা আইনের আশ্রয় নিবে। আগে শুনতাম কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণ হয়েছে, ছাত্র ছাত্রী লাপাত্তা বা শিক্ষক ছাত্রী কে নিয়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু বালিকা হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পালিয়ে যাওয়া বা উধাও হওয়ার মত ঘটনা ঘটছে। তাহলে ছেলে মেয়েকে কোথায় দিবে অভিভাবকরা।
তবে ঘটনা জানতে মাদ্রাসায় খোঁজ করে হাফেজ শিক্ষক মোতাহারকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহিত ০১৭৬৫ ০৮২২৬১মোবাইল নম্বরে ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আফজাল হোসেন বলেন, এঘটনায় নাবালক শিক্ষার্থীর পিতা থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইন গত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।