অভয়নগরে সোনালী ব‍্যাংকের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ঋণ নিয়ে এক প্রতারকের অভিনব প্রতারণা

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধিঃ

যশোরের অভয়নগরে সোনালী ব‍্যাংক পিএলসি অভয়নগর শাখার কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ঋণ গ্রহণ করে সালাম ফকীর নামে এক ব‍্যক্তির অভিনব প্রতারণার খবর তদন্তে উঠে এসেছে।
সম্প্রতি সবুজ শিকদার নামে এক ব‍্যক্তি উপজেলার কাপাশহাটি গ্রামের মৃত সায়েব আলী ফকিরের ছোট ছেলে হাজী রিয়াজ উদ্দিনের সাথে দেখা করে মহাকাল মৌজার এসএ ১০৭২ আরএস ১৮১৫ দাগের ১৬ শতকের মধ্যে ৮ শতক, এসএ ১২৫০ আরএস ১৮১৬ দাগের ১৯ শতকের মধ্যে ৯.৫০ শতক এবং এসএ ১২৫১ দাগের ১৬ শতকের মধ্যে ৮ শতক একুনে ২৫.৫০ শতক জমি তার নিকট আত্মীয় ক্রয় করবেন বলে উক্ত জমি সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য জানতে চান। তিনি আরও জানান জমিটি সোনালী ব‍্যাংকে মর্টগেজ দেওয়া আছে এবং সালাম ফকির আমাদের সাথে বায়না চুক্তি করেছেন, বায়নার ২য় কিস্তি দিয়ে ব‍্যাংক থেকে ঋণ শোধ করে জমিটি লিখে দেবেন।
রিয়াজ উদ্দিন জানান, চুক্তি পত্রে জমির যে চৌহদ্দী ও বর্ণনা দেওয়া আছে তা মূল মালিক আমার মা সালেহা বেগম ২০০০ সালের পূর্বেই বিক্রয় করেছেন এবং সে জমির মালিকগণ নামপত্তন করে দখলে আছেন। সালাম ফকির জনৈক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে জমির ওয়ারেশ সাজিয়ে একটি পালসার মটরসাইকেলের বিনিময়ে তার নামে ও স্ত্রী জুবিলি সালামের নামে সম্পূর্ণ জমি লিখে নিয়ে উক্ত জমিতে বসবাসকারী ও আমার মা সালেহা বেগমসহ মোট ৬৫ জনের নামে দেওয়ানী মামলা করছেন যার নং ১৯৭/২১। মামলাটি এখনো চলমান আছে।
সালাম ফকিরের মা সালেহা বেগম বলেন, আমি বড় ছেলে সালামকে নিজের টাকায় হজ্জ্ব করিয়ে এনেছি যাতে সে ভালো হয়ে যায়, কিন্তু অদ‍্যবধি সে ভালো হয়নি। এই বৃদ্ধ বয়সে তার একের পর এক মামলার কারণে আমাকে যশোর আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে। কাপাশহাটি এলাকায় শুধুমাত্র একটি মামলায় সে ৬৫ জনকে আসামী করে হয়রানি করছে। আমাকে সে মেরে মারাত্মক আহত করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। সরকারের বিভিন্ন বিভাগে অভিযোগ করেও কোন বিচার পাইনি।
সালাম ফকির বলেন, ব‍্যাংক কাগজপত্র দেখে ঠিক পেয়েছে বলে ঋণ দিয়েছে, না হলে কি দিত?
মামলার কপি নিয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, সোনালী ব‍্যাংক নওয়াপাড়া শাখায় প্রায় কোটি টাকা মূল‍্যের জমি মর্টগেজ রেখে মাত্র ৭ লক্ষ টাকা জুবিলি সালাম সিসি ঋণ নিয়েছেন। এই ঋণ গ্রহনের সময় সরখোলা গ্রামের আঃ সোবহান ব‍্যাংকটির ব‍্যবস্থাপক(এসপিও) মোঃ হাবিবুর রহমানকে নওয়াপাড়া সরকারি কলেজে মামলাবাজ সালামের অবৈধ নিয়োগ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার কাজী নূর ইসলাম কর্তৃক তদন্ত কমিটির পদক্ষেপকে ব‍্যাহত করার বিষয়ে তথ‍্য দিলেও অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে যথাযথ তদন্ত ছাড়াই লোন অফিসার ও ব‍্যবস্থাপক ঋণ মঞ্জুর করেন। ঘটনা এখানেই শেষ নয়, ব‍্যাংক মর্টগেজ নিয়েছে মানে কাগজপত্র সঠিক আছে দেখিয়ে একজন ক্রেতার নিকট প্রায় কোটি টাকা মূল‍্যের জমি ৫০ লাখ টাকায় বিক্রয় চুক্তি করে ৩ লক্ষ টাকা বায়না গ্রহন করেন। কিন্তু ক্রেতা ব‍্যক্তিগত তদন্ত করে দেখেন জমিটি পূর্বেই বিক্রি হয়েছে এবং সেখানে বতর্মান মালিকেরা দখল ও নামপত্তন পূর্বক বাড়িঘর করে বসবাস করছেন।
একজন সাধারণ ক্রেতা জমির বিষয়ে প্রকৃত তথ‍্য উদঘাটন করলেন অথচ ব‍্যাংক কর্তৃপক্ষ ব‍্যার্থ হল এমন প্রশ্নের জবাবে ব‍্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা কাগজপত্র দেখে সঠিক পেয়েছি, তদন্ত করেও সন্দেহজনক কিছু পাইনি, তাছাড়া প্রফেসর পরিচয়দানকারী সালাম ফকিরকে বিশ্বাস করেছিলাম। তিনি আরও বলেন, সালাম ফকিরের বেতন হয় এই ব‍্যাংক থেকে, তার চেকও আমাদের কাছে আছে যা দিয়ে সমন্বয় করতে পারব। এছাড়া তার সাথে কথা হয়েছে, শিঘ্রই জমি বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করে দেবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *