
মোঃ মকবুলার রহমান
স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী
আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর বর্জ্য দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে অপসারণে বিশদ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুরো রাজধানীজুড়ে পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে এবার প্রায় ২০ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাজ করবেন বলে জানানো হয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) প্রায় ১০ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী মোতায়েন করবে, যাদের মাধ্যমে ঈদের দিন ১২ ঘণ্টার মধ্যেই প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই কাজে ব্যবহৃত হবে ২০৭টি ডাম্প ট্রাক, ২০০টি মিনি ট্রাক এবং অন্যান্য পরিচ্ছন্নতা সরঞ্জাম।
এরই মধ্যে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ডিএসসিসির ৭৫টি ওয়ার্ডে ১ লাখ ৪০ হাজার বায়োডিগ্রেডেবল ব্যাগ, ৪০ টন ব্লিচিং পাউডার এবং ২২২ গ্যালন জীবাণুনাশক বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া, ঈদের সময় বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় যেন কোনো বিঘ্ন না ঘটে, সে জন্য সব পরিচ্ছন্নতাকর্মীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
কাজের কার্যকারিতা ও জরুরি সমন্বয় নিশ্চিত করতে নগর ভবনে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। ডিএসসিসির প্রশাসক শাহজাহান মিয়া নগরবাসীর উদ্দেশে অনুরোধ করে বলেন, “আমরা বাসিন্দাদের বলবো, নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি দিন এবং বর্জ্য ফেলার ক্ষেত্রেও সিটি করপোরেশনের নির্দেশনা মেনে চলুন। দয়া করে যেখানে সেখানে বর্জ্য ফেলে নগরীর পরিবেশ দূষিত করবেন না।”
অপরদিকে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)ও ঈদের দিন থেকে তিন দিনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিস্তৃত কর্মপরিকল্পনা নিয়েছে। এই সিটিতে থাকবে ২২৪টি ডাম্প ট্রাক, ৩৮১টি পিকআপ ভ্যান, ২৪টি পেলোডার, এবং সহস্রাধিক পরিচ্ছন্নতাকর্মী, যারা প্রায় ২০ হাজার টন কোরবানির বর্জ্য সরানোর লক্ষ্যে কাজ করবে।
ডিএনসিসি এবারের ঈদে পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ১২ লাখ ৫০ হাজার পলিথিন ব্যাগ, ২,৫০০ বস্তা ব্লিচিং পাউডার এবং ৪,০০০ ক্যান জীবাণুনাশক বিতরণ করেছে। এছাড়াও, আমিনবাজার ল্যান্ডফিলে কোরবানির বর্জ্য ফেলার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে একটি পৃথক প্ল্যাটফর্ম ও দুটি গর্ত (ট্রেঞ্চ), যা পরিবেশবান্ধব বর্জ্য ব্যবস্থাপনার একটি নজির।
ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ আজাজ বলেন, “শহরকে পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য রাখতে আমরা ঈদের দিনই অধিকাংশ বর্জ্য অপসারণ শেষ করার লক্ষ্য নিয়েছি। প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি নেই।”
এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে দুই সিটি করপোরেশন প্রমাণ করেছে যে, সঠিক পরিকল্পনা, সময়োপযোগী প্রস্তুতি এবং জনগণের সহযোগিতা থাকলে একটি ব্যস্ত মহানগরীতেও ঈদের মতো বড় উৎসবের সময় পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা সম্ভব। তবে এ পরিকল্পনা সফল করতে নাগরিকদের সচেতনতাই হতে হবে মূল শক্তি।