করোনা ভাইরাসের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট

সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার– জাহারুল ইসলাম জীবন

সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে ভারত এবং অন্যান্য সংক্রামক অঞ্চলে, করোনা ভাইরাসের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট যেমন অমিক্রন LF.7, XFG, JN.1 এবং NB.1.8.1 এর সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা থেকে ০৪ জুন ২০২৫ তারিখে জারিকৃত এক অফিস ফরমান (স্মারক নং- স্বাঃ অধিঃ/এ-আই/আইএইচআর/২০২৫/৩৮৬০) অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশের সকল স্থল, নৌ এবং বিমান বন্দরের আইএইচআর (International Health Regulations-2005) ডেস্কে সার্ভেল্যান্স এবং রিস্ক কমিউনিকেশন কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে্, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং ভ্রমণ সংক্রান্ত পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে সম্ভাব্য সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
সংক্রমণ প্রতিরোধে নির্দেশনাসমূহঃ-
সাধারণ জনগণের জন্য সরকার নিম্নোক্ত প্রতিরোধমূলক নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেঃ
** হাত ধোয়া: বারবার এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সাবান দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে।
** মাস্ক ব্যবহার: নাক ও মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক।
** সামাজিক দূরত্ব: আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
** চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ না করা: অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
** হাঁচি-কাশি শিষ্টাচার: হাঁচি-কাশির সময় বাহু, টিস্যু অথবা কাপড় দিয়ে নাক ও মুখ ঢেকে রাখতে হবে।
পয়েন্টস অব এন্ট্রিতে করণীয়ঃ-
দেশের সকল স্থল, নৌ এবং বিমান বন্দরগুলোতে (পয়েন্টস অব এন্ট্রি) সরকার নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেঃ
** আইএইচআর ডেস্কের সতর্কতা: সকল আইএইচআর স্বাস্থ্য ডেস্ককে সতর্ক থাকতে হবে এবং হেলথ স্ক্রিনিং ও সার্ভেল্যান্স কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।
** তাপমাত্রা নির্ণয়: থার্মাল স্ক্যানার বা ডিজিটাল হ্যান্ডহেল্ড থার্মোমিটারের মাধ্যমে নন-টাচ টেকনিকে ভ্রমণকারীদের তাপমাত্রা নির্ণয় করতে হবে।
** মাস্ক, গ্লাভস ও পিপিই মজুদ: চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে মাস্ক, গ্লাভস এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (PPE) মজুদ রাখতে হবে।
** জনসচেতনতা বৃদ্ধি: ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য রোগ প্রতিরোধ নির্দেশনাগুলো ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে।
** অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ পরিহার: জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত ভারত ও অন্যান্য আক্রান্ত দেশসমূহে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য নাগরিকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সন্দেহজনক রোগীদের ক্ষেত্রে করণীয়ঃ-
যদি কোনো ব্যক্তি অসুস্থ বোধ করেন বা করোনা ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেয়, তবে তাদের জন্য নিম্নোক্ত নির্দেশনাগুলো প্রযোজ্য:
** ঘরে থাকুন: অসুস্থ হলে বাইরে না গিয়ে বাড়িতে থাকতে হবে।
** হাসপাতালে যোগাযোগ: মারাত্মক অসুস্থ হলে নিকটস্থ হাসপাতালে দ্রুত যোগাযোগ করতে হবে।
** মাস্ক ব্যবহার: রোগীর নাক ও মুখ ঢাকার জন্য অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
** হটলাইনঃ প্রয়োজন হলে আইইডিসিআর (IEDCR) এর হটলাইন নম্বরে (০১৪০১-১৯৬২৯৩) যোগাযোগ করা যাবে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার এই পদক্ষেপগুলো দেশের জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং করোনা ভাইরাসের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ঠেকাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই কঠিন সময়ে সকলের সহযোগিতা এবং প্রতিরোধ মূলক সতর্কতা একান্তই কাম্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *