স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ জেলা মোঃ রুহুল আমিন
সম্প্রতি ইউনিলিভার বাংলাদেশ সম্পর্কে কিছু ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তিকর প্রচারণা সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক বিভ্রান্তিমূলক। গত ছয় দশক ধরে দেশের মানুষের আস্থায় ও ভালোবাসায় গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার বাংলাদেশ কখনোই সহিংসতা আগ্রাসন বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না, এরা ভবিষ্যতেও কখনো থাকবে না। ইউনিলিভার বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ, নীতিনিষ্ঠ এবং দেশের আইন মেনে চলা একটি প্রতিষ্ঠান।
ইউনিলিভার বাংলাদেশ পরিষ্কারভাবে জানাচ্ছে যে ইউনিলিভার একটি যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানি, যা লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত শতভাগ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। ১৯৭৩ সাল থেকে ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের ৩৯.২৫% মালিকানা বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন এবং বাকি ৬০.৭৫% যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানি ইউনিলিভার গ্রুপের। ইউনিলিভার বাংলাদেশ-এর পরিচালনা পর্ষদে শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে এবং বাংলাদেশের সকল আইন, নীতিমালা ও সরকারি দিকনির্দেশনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে পেশাদারভাবে প্রতিনিয়ত এর কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যাচ্ছে, যা ইউনিলিভার বাংলাদেশের দায়িত্বশীলতা ও স্বচ্ছতা আরও সুস্পষ্ট করে তোলে। পাশাপাশি, সরকারের কোষাগারে নিয়মিত আয়কর ও লভ্যাংশ প্রদান করে দেশের অর্থনীতিতে দৃশ্যমান অবদান রেখে চলেছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ।
১৯৬২ সাল থেকে ইউনিলিভার বাংলাদেশ দেশের মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। প্রতি ১০টি পরিবারের ৯ টিতে ইউনিলিভারের কোনো না কোনো পণ্য ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে বিপণনকৃত ৯৬ শতাংশ পণ্য দেশেই উৎপাদিত হয়, এবং এই উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সরাসরি জড়িত। শুধু তাই নয়, ইউনিলিভারের পণ্যের বিপণন ও বিতরণ কার্যক্রমে দেশের দশ লক্ষেরও বেশি খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতা সক্রিয়ভাবে যুক্ত, যা সরাসরি ও পরোক্ষভাবে লক্ষাধিক মানুষের জীবিকা নির্বাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
শুধু ব্যবসায়িক সাফল্য নয়, ইউনিলিভার বাংলাদেশের মূল অঙ্গীকার হলো বাংলাদেশের মানুষের পাশে থাকা, সমাজের উন্নয়নে অবদান রাখা এবং একট ন্যামা, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে ভূমিকা রাখা। স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন, তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন পরিস্বহতা ও পরিবেশয়াড়র উদ্যোগসহ বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত দেশের মানুষের পাশে রয়েছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ।
২০০২ সালে অলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ চরাঞ্চলের মানুষের জন্য 'লাইফবয় ফ্রেন্ডশিপ হসপিটাল' নামে দেশের প্রথম ভাসমান হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে ইউনিলিভার বাংলাদেশ, যা ইতোমধ্যে ১৫ লাখেরও বেশি মানুষকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। ২০০২ সাল থেকে 'লাইফবয় স্কুল অব ফাইভ' প্রোগ্রামের মাধ্যমে দেশের প্রায় ১০ লক্ষ শিক্ষার্থীকে সঠিকভাবে হাত ধোয়ার গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং প্রতিযন্তর প্রায় ১০ লক্ষ মানুষকে ৩০০ এর অধিক ক্যাম্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে দাঁতের চিকিৎসা দেওয়া হয়, যেখানে অংশ নিচ্ছেন প্রায় ৩,০০০ স্বেচ্ছাসেবী দাঁরের চিকিৎসক।
কোভিড-১৯ মহামারির সময় ইউনিলিভার বাংলাদেশ আইসিডিডিআরবি-তে কোভিড পরীক্ষার ফিট সরবরাহ ও সরকারি হাসপাতালে ১০০টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর প্রদান করেছে। ২০২৪ সালে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ হাজারের এর অধিক মানুষকে জরুরি সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি কন্যা পরবর্তী রোগ প্রতিরোধে ইউনিলিভার বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা সদর হাসপাতালগুলোতে হাত ধোয়ার জন্য বিনামূল্যে ১৪ লাখ সাবান বিতরণ করেছে এবং ব্র্যাকের সহযোগিতায় স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রচারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।
শুধু স্বাস্থ্যসেবা নয়, পরিবেশ ও কমিউনিটি উন্নয়নেও ইউনিলিভার বাংলাদেশের অবস্থান প্রশংসনীয়। ২০২২ সালে থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ও ইপসা এর সহযোধিতায় ব্যংলাদেশে সর্ববৃহৎ প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় ২৩ হাজার টনের বেশি প্লাস্টিক সংগ্রহ ও পুনর্যাবহার করা হয়েছে। দেশের প্রথম বর্জ সংগ্রহকারীদের জন্য চালু কর হয়েছে 'ইনফর্মাল ওয়েস্ট ওয়ার্কার ইন্স্যুরেন্স পলিসি।
বাংলাদেশের উন্নয়ন ও ইউনিলিভার বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা একই সুতোয় গাঁথা। ভুল তথ্যের ভিত্তিতে ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডকে আখ্যায়িত করে ইউনিলিভার বাংলাদেশের এই সুদীর্ঘ ছয় দশকের ব্যবসায়িক সুনামকে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটি অপপ্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে-যা অত্যন্ত দুঃখজনক। ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড কখনোই মানবতাবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড আমরা গণহত্যাকে সমর্থন করি না এবং বাংলাদেশ সরকারের ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে কোনোভাবেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভ্রান্তিকর ও ভুল তথ্যে সংশ্লিষ্ট নয়।
এই সম্পর্কে জানতে চাইলে, কাজী আবুল বাশার বলেন, আমি ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড এর সাথে যুক্ত একুশ বছর। আমার জানা মতে, অনেকের ধারণা এটা ইসরাইলি পন্য। ইসরাইলের সাথে কোন সম্পর্ক নেই ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড এর। ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের যখন জন্ম, তখন ইসরাইল নামে দেশটা জন্ম হয় নি। ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের জন্ম দুই জন ব্যক্তির জন্য হয়েছে। এক জন হল্যান্ডের এবং অন্য জন ইংল্যান্ড এর। তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে সকল বিষয় সাধারণ মানুষ দেখছেন যে ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড এর সকল পন্য ইসরাইলের। এটা ভুল ধারণা।
দেশের মানুষের কল্যাণে, মানবতার পক্ষে ও সত্যের পথে একসাথে ইউনিলিভার বাংলাদেশ আপনাদের পাশে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
ইপেপার
সম্পাদক ও প্রকাশক ঃ মাহমুদুল হাসান মাহমুদ
বার্তা সম্পাদকঃ কে এম জাহিদ হাসান
প্রধান কার্যালয়ঃ ২৬৩/ফকিরাপুল, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০
www.dailyags.com © 2024