আব্দুল মোমিন - নিজস্ব প্রতিবেদক।
সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার হামিন দামিন গ্রামের কৃষক জামিল ও তার স্বজনরা পৈত্রিক জমির অধিকার ফিরে পেতে চায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ব্রহ্মগাছা ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত জে এল ১৪৪ নং হামিন দামিন মৌজার আরএস ৯২ নং খতিয়ান মূলে জামিলের পিতা আব্দুর রশিদ ০.৬৮০ হিস্যাংশে ৫ দাগে মোট ৮৩ শতাংশের ৫৬.৪৪ শতাংশের রেকর্ডীয় মালিক। সে হিসেবে উক্ত খতিয়ানের ২৪৮ দাগের ২৯ শতাংশের ১৯.৭২ শতাংশের রেকর্ডীয় মালিক যা ওয়ারিশ সূত্রে জামিল ও তার অন্যান্য সহোদর ভাইবোনের পাওয়ার কথা। কিন্তু জামিল ও তার স্বজনরা জানেই না তাদেরই পৈত্রিক জমি পার্শ্ববর্তী গ্রামের ইমদাদুল হক সরকার ভোগ দখল করে খাচ্ছে দীর্ঘ ৭ বছর যাবৎ। রায়গঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে অন্য কাগজের সন্ধান করতে গিয়ে পেয়ে যায় জমির হদিস যা ইমদাদুল হক সরকার নিজ নামে খারিজ করেছেন বলে জানায় দিনমজুর জামিল। তারপর সে উক্ত খারিজ বাতিলের আবেদন করে রায়গঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর। খারিজ কেস নং ৪৫/২০২৩-২৪। অতঃপর বিজ্ঞ কমিশনার পর পর কয়েকটি তারিখে তার কাগজ পত্র যাচাই করে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে খারিজটি অবৈধ বিবেচনা করে বাতিল করেন এবং রায়ের একটি কপি জামিলকে প্রদান করেন এবং অনুরূপ একটি কপি ব্রহ্মগাছা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বরাবর পাঠিয়ে দেন। জামিল যথারীতি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে খাজনা প্রদান করে খাজনার রশিদও সংগ্রহ করেন। জমি নিষ্কণ্টক ভেবে জামিল গত ১/১২/২০২৪ তারিখে জমিতে যায় ধান কাটতে। তখন ইমদাদুল হকের ভাড়া করা কিছু লোকজন তেড়ে আসে ধান কাটায় বাঁধা দিতে এমনকি ইমদাদুল হকের স্ত্রী নিজেই জমিতে এসে জামিলকে হুমকি দিয়েছে বলে জানায় জামিল। ইমদাদুল হকের একান্ত অনুগত হবিবর রহমান ও তার ছেলে জামিলের হাত থেকে ধানের আঁটি ছিনিয়ে নিয়ে জামিলকে হুমকি দেয়। আরো হুমকি দেয় জলিল ও সুজন। উক্ত জলিল ব্রহ্মগাছা ইউনিয়নের কৃষক লীগের সাবেক নেতা ও এলাকায় নানা অপকর্মের সাথে জড়িত বলে জানা গেছে। সম্প্রতি জলিল সরকারি রাস্তার গাছ কেটে ১৫,০০ টাকায় বিক্রি করেছে পাশের গ্রাম বামনবাগের জনৈক স'মিল মালিক আশরাফের কাছে। আর সুজন মাদক মামলার আসামি বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। যাহোক সেদিন জামিল ভয়ে-আতঙ্কে বাড়ি ফিরে যায়। এ ব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার কথা বললে জামিল জানায় থানা পুলিশকে এখনও জানায়নি সে তার পৈত্রিক জমিটুকু ফেরত পেতে দারস্থ হয় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার। সংস্থা বিষয়টি আমলে নিয়ে অনুসন্ধান চালায়। তাদের অনুসন্ধানে যা উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জামিলের উক্ত খারিজের বিরুদ্ধে ইমদাদুল হক সরকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব, সিরাজগঞ্জ বরাবর আপিল করে। উক্ত খারিজ আপিল মোকদ্দমা নং ৯৭/২০২৪। সেই আপিল পিটিশনে উল্লেখ করা হয়, আপিলকারীগণের পূর্ববর্তী অর্থাৎ কথিত আর এস রেকর্ডীয় মালিক আব্দুল গনি যিনি উক্ত খতিয়ানভূক্ত ৫ দাগে মোট ৮৩ শতাংশ ভূমির ০.৩২০ হিস্যাংশে ২৬.৫৬ শতাংশ ভূমির মালিক কিন্তু তার ওয়ারিশ এক পূত্র সামছুল আলম ও এক কন্যা শোনফুল এবং কন্যা শোনফুল নেছা গত ১০/০৪/২০০০ তারিখের রেজিঃকৃত ১৯৩৭ নং দলিলমূলে নালিশী ২৪৮ নং দাগের .০৭২৫ একর ভূমি আরও অন্যান্য দাগের ভূমিসহ মোট . ১৫২৫ একর ভূমি তার স্বামী আব্দুস সালাম সরকার বরাবর হস্তান্তর করেন। তৎপর কথিত আর এস রেকর্ডীয় প্রজা আব্দুল গনির ওয়ারিশ পূত্র সামছুল আলম নালিশী তফশিল বর্ণিত আর এস ২৪৮ দাগের সাকুল্য .২৯০০ একর ভূমি গত ইং-১৯/০২/১৯৫৩ তারিখের ১৭৩৫ নং দলিল মূলে প্রাপ্ত হইয়া সরেজমিনে ভোগদখল করিয়া আসিতে থাকা অবস্থায় আর রেকর্ডে আংশিক ত্রুটির কারনে শামসুল গত ইং-১৬/০৫/২০০১ তারিখের ২৯৭৬ নং রেজিঃকৃত না দাবি দলিল মূলে আব্দুস সালাম বরাবর হস্তান্তর করেন। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সামছুল আলমের জন্ম ১৯৫৩ সালের পরে হয়েছে। তৎপর আব্দুস সালাম এবং তার স্ত্রী শোনফুল নেছা নালিশী দাগের .২৯০০ একর ভূমিসহ আরও অন্যান্য অনালিশী খতিয়ান ও দাগের মোট .৫৪২৫ একর ভূমি ১৩৮৬/২০০০-২০০১ নং নামজারি কেসের মাধ্যমে নামজারি করিয়া ভোগ দখল করিতে থাকেন। তৎপর আব্দুস সালাম মৃত্যু বরণ করায় তদ্বীয় ওয়ারিশ ছিফাতুল্লাহ সরকার গং নালিশী তফশিল বর্ণিত দাগের যাবতীয় ভূমিসহ আরও ভিন্ন ভিন্ন দাগের ভূমিসহ মোট ১.০৩৭৫ একর ভূমি ২১৮৪/1X-1/২০১৬-২০১৭ নং নামজারি কেসের মাধ্যমে নামজারি পূর্বক সন সন খাজনাদি প্রদান পূর্বক সরেজমিনে ভোগদখল করিতে থাকাবস্থায় উল্লেখিত সিফাতুল্লাহ সরকার গং গত ইং-১৮/০১/২০১৮ তারিখে রেজিঃকৃত ৪৫৬ নং বিক্রয় কবলা দলিল মূলে নালিশী দাগের সাকুল্য .২৯০০ একর এবং অনালিশী দাগের ভূমিসহ মোট ১.০৬০০ একর ভূমি অত্র আপিলকারীগণ বরাবর হস্তান্তর করিয়া সরেজমিনে দখল হস্তান্তর করেন। কিন্তু উপরোল্লিখিত দলিলের কোনো কপিই জনাব ইমদাদুল হক সরকার দেখাতে পারেনি। আজকের গোয়েন্দা সংবাদের অনুসন্ধানে ০১/০৮/২০১২ তারিখের ৫৬৫৯ নং একটি দলিল পাওয়া গেছে যার যথার্থতা প্রশ্নবিদ্ধ কারণ উক্ত দলিল প্রত্যয়নে কোনো প্রকার দলিল নং উল্লেখ করা হয়নি এবং যা প্রত্যয়ন সময়ে রেজিঃ বালামে নকল করা হয়নি মর্মে লেখা আছে। এমতাবস্থায় নিরক্ষর জামিল মানবাধিকার সংস্থার শরণাপন্ন হলে তার বিষয়েও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যানকে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের অনুরোধ করে একটি পত্র প্রেরণ করা হয়।
ইপেপার
সম্পাদক ও প্রকাশক ঃ মাহমুদুল হাসান মাহমুদ
বার্তা সম্পাদকঃ কে এম জাহিদ হাসান
প্রধান কার্যালয়ঃ ২৬৩/ফকিরাপুল, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০
www.dailyags.com © 2024