
সাংবাদিকতার ক্ষয়-ক্ষরণ কারও অদেখা বা অজানা নয়?
কলম শক্তির ক্ষমতা আমাদের সমাজে অনেকের অজানা।
সাংবাদিকতা সমাজের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে পরিচিত, যার প্রধান দায়িত্ব সত্য প্রকাশ এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু যখন সাংবাদিকেরা পেশাগত নীতিমালা ও নৈতিকতা উপেক্ষা করে বিভ্রান্তিকর তথ্য, গুজব বা উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ পরিবেশন করে, তখন সেটি সমাজ ধ্বংসের হাতিয়ারে পরিণত হয়। ভুয়া খবর, অপপ্রচার, এবং পক্ষপাতদুষ্ট রিপোর্টিং সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করে, মানুষের মধ্যে অবিশ্বাসের বীজ বপন করে এবং গণতান্ত্রিক কাঠামোকে দুর্বল করে তোলে।
একজন সাংবাদিকের কলম হতে পারে পরিবর্তনের শক্তি, আবার ভুল ব্যবহারে সেটি হতে পারে ধ্বংসের অস্ত্র। তাই সাংবাদিকদের উচিত সত্যনিষ্ঠা, নিরপেক্ষতা এবং নৈতিকতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকা, যাতে তারা সমাজের জন্য আলোর দিশারি হয়ে উঠতে পারে, অন্ধকারের দূত নয়।
সংবাদমাধ্যমের কাজ বিশ্লেষণাত্মক, যুক্তিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক সহনশীল সমাজ গড়ে তুলতে সহায়তা করা। কারণ, গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজন তথ্যসমৃদ্ধ জনসমাজ। একটি বিশ্লেষণাত্মক সমাজ গড়া না গেলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পাবে কোথা থেকে? ক্ষমতা ও শাসন চোখে চোখে রাখা সাংবাদিকতার প্রধান কাজ। কারণ, ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের ব্যবহার ও অপব্যবহার এক জনস্বার্থমূলক বিষয়।
অনেকের কাছে সাংবাদিকতা এখন একটি উপলক্ষমাত্র। বিত্তবৈভব, ক্ষমতা অবস্থান ধরে রাখার বিশেষ কৌশল। সমকালীন সাংবাদিকতার ক্ষয়-ক্ষরণ কারও অদেখা বা অজানা নয়? অরুন্ধতী রায় যেমনটি বলেন, ‘একবার কেউ কিছু দেখে ফেললে, তাকে অদেখা বানানো যায় না।’ ঠিক একইভাবে একবার কেউ কিছু শুনে ফেললে, তাকেও না-শোনা করা যায় না।
মোঃ সুরুজ আলী
সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক উপচার পত্রিকা।
দপ্তর সম্পাদক
জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা রাজশাহী বিভাগ।