পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদীর পানির গন্ধ ছড়াচ্ছে

পুরাতন ব্রহ্মপু নদীর পানির গন্ধ ছড়াচ্ছে

অরবিন্দ রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ

নরসিংদীর পুরাতন ব্রহ্মপুএ নদীর পানিতে নিঃশ্বাসে গন্ধ ছড়াচ্ছে। নরসিংদীর পাঁচদোনা, মাধবদী, বাবুরহাটের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পুরাতন ব্রহ্মপুএ নদীর পাশ দিয়ে দুগর্ন্ধে মানুষ হাত দিয়ে নাক ধরে যাতায়াত করতে হয়। নিঃশ্বাস নেয়ার সুযোগ হলেও দুগর্ন্ধ কাটছে না। দীর্ঘ দিনের মরণ দশা থেকে সাময়িক বাঁচানো হয়েছে নদটিকে। নদীটি খননের জন্য প্রায় কোটি টাকা খরচও করা হয়েছে । অথচ খনন কাজ শেষ না হতেই পুনরায় দূষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ব্রহ্মপুত্র নদী। 
পুরাতন ব্রহ্মপুর নদী দেখলে এখন বুঝাই যায় না। নদীটি দু ‘পাশ ভরে সুরু খালে পরিনত হয়েছে। বিভিন্ন মিল ফ্যাক্টরির বর্জ এসে নদীর পানির সাথে যুক্ত হয়ে বিষাক্ত হয়ে গেছে। মানুষ এ নদীর পানি ব্যবহার করতে পারছেন না। স্রোত হীন এ নদীর পানি দিয়ে দুর্গন্ধ বের হয়।

নরসিংদী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায় , ২০২১ সালে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের সীমারেখার মধ্য থেকে মোট ২১৪টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এছাড়া নরসিংদীর সীমারেখার অভ্যন্তরে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই ব্রহ্মপুত্র নদটি খননের জন্য প্রায় ৩৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে খনন প্রকল্পের কাজে।
শীলমান্দী ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, অবৈধ দখলে থাকা ব্রহ্মপুত্র নদের প্রায় ৭০ শতাংশ জমি সম্প্রতি দখলমুক্ত করা হয়েছে। নদটির পূর্ব এবং পশ্চিম পাশ দিয়ে মাটি ভরাট করে নদের জায়গা দখল করে প্রায় শতাধিক স্থাপনা তৈরি করা হয়েছিল।

দীর্ঘ দিন দখলে থাকার পর অবশেষে ২০২১ সালে যখন নদটি খনন প্রক্রিয়ার কাজ শুরু হয়। নদীর দু’ পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। অনেক ব্যবসায়ীর বহুতল ভবনের বর্ধিত অংশ (নদের সীমানা অতিক্রম করা) ভাঙা হয়েছে। কিন্তু খনন কাজ শেষ না হতেই যে হারে দূষণে বিপর্যস্ত হয়ে যাচ্ছে তাতে আর দুঃখ কাটছে না ব্রহ্মপুত্র নদীর।নদী দখল অনেকটা মুক্ত হলেও দূষণ দূর হচ্ছে না।
দেখা গেছে, নদটির দু’ধারেই ময়লা আবর্জনার স্তূপ। মাঝখানে কালো রঙের বর্জ্য পানি। প্লাস্টিকের বোতল ও আবর্জনা ভেসে বেড়াচ্ছে। নদীর পানির দুর্গন্ধ বাতাসে গন্ধ ছড়াচ্ছে। নদীর পাশ দিয়ে মানুষ নাক ধরে যাতায়াত করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ নদীর উপর দিয়ে মাধবদী এবং বাবুরহাটে প্রবেশের জন্য যে ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে তা অপরিকল্পিত । কারণ নদীর দুই পাশের পরিধি বা প্রস্থ যেখানে প্রায় ৪০ ফুট লম্বা সেখানে ব্রিজ অর্ধেকের চেয়েও ছোট করা হয়েছে। এতে স্বাভাবিক ভাবেই নদীর দু’পাশে মাটি চাপিয়ে নদীকে চিকন খালে পরিণত করা হয়েছে।

এলাকার বয়স্ক মানুষের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ব্রহ্মপুত্র নদী দিয়ে এক সময় পাল তোলা নৌকা চলতো। দূর-দূরান্ত থেকে নৌ-পথে মাধবদী ও বাবুর হাটে মানুষ বাণিজ্য করতে আসতেন। কিন্তু কালের বিবর্তনে নদীটির সেই অতীত ঐতিহ্য হারিয়ে গেছে। নদীর যে অংশ আছে, নদীর কিছু অংশ প্রভাবশালীদের দখল করে রেখেছে। পুরাতন ব্রম্মপুত্র দূষণে বিপর্যস্ত হয়ে গেছে। তবে নতুন করে খনন করার উদ্যোগ নেয়ায় নদটি পুনরায় জীবন্ত হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এলাকার মানুষ। আবারও ময়লা আবর্জনা, দুষিত পানিতে শুধু দুগন্ধ ছড়াচ্ছে।

নরসিংদী পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূএে জানা যায়, নদীটির উচ্ছেদ অভিযানও অব্যাহত রয়েছে। নদী দূষণের ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *