
অরবিন্দ রায়, স্টাফ রির্পোটারঃ
সুজন দও জীবন যুদ্ধে হার না মানা এক শিক্ষক সুজন চন্দ্র দও একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষক নরসিংদী জেলার সদর উপজেলার শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী পাঁচদোনা স্যার কৃষ্ণ গোবিন্দ স্কুল এন্ড কলেজের ইংরেজি শিক্ষক। প্রতিবন্ধী হয়েও তিনি জীবন যুদ্ধে হার মানেন নি। শিক্ষক সুজন চন্দ্র দও স্বাভাবিক ভাবে হাটতে পারেন না। জন্মলগ্ন থেকেই তার ডান পা স্বাভাবিকের চাইতে কিছুটা ছোট। স্বাভাবিক চলাফেরার জন্য বাঁশের একটি লাঠি তার চলার পথের নিত্য সঙ্গী। প্রতিদিন তিনি পলাশ উপজেলার সানের বাড়ি গ্রাম থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে পাঁচদোনা স্যার কৃষ্ণ গোবিন্দ গুপ্ত স্কুল এন্ড কলেজে থেকে গিয়ে বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন।
শারীরিক পঙ্গুত্বের কারনে স্কুল কলেজে লেখা পড়ার সময় তিনি অনেকের কাছে অবহেলার পাএ হয়েছেন। সুজন দত্তের মনে ছিল প্রচন্ড আত্নবিশ্বাস, সততা, আন্তরিকতা, পড়ালেখার প্রতি ভালোবাসা। তার স্বপ্ন ছিল শিক্ষক হবার। তাইতো মানুষের সকল সমালোচনা, অবহেলাকে উপেক্ষা করে সামনের দিকে এগিয়ে চলেন। তিনি ১৯৭৬ সালে নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার সানেরবাড়ি গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন।
১৯৯১ সালে সানের বাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি , ১৯৯৩ সালে পলাশ শিল্পাঞ্চল কলেজ থেকে এইচ এস সি , ১৯৯৫ সালে নরসিংদী সরকারি কলেজ থেকে ৩০০ নম্বরে র ইংরেজি সহ বি এ পাশ করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি সানেরবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন । কিন্ত তার মন তৃপ্ত হয়নি। তিনি বড় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করার স্বপ্ন দেখেন। ২০০০ সালে পাঁচদোনা স্যার কে. জি. গুপ্ত উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন ।
২০০৩ সালে পলাশ উপজেলার রাবান গ্রামের তরনী করের ৩য় মেয়ে লীনা রানী করের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার এক মেয়ে এক ছেলে। সুজন দত্তের সাথে আলাপ করে জানা যায়, তার সংসারে অভাব থাকলেও কোনো অশান্তি নেই । স্ত্রী লীনা রানী আঁচল দিয়ে তার সংসার আগলে রেখেছেন। তার এক মেয়ে, এক ছেলে। সন্তানদের মানুষ করাই তার এক মাএ স্বপ্ন।
২০১০ সালে তিনি ঢাকা টিচার ট্রেনিং কলেজ থেকে বি এড ডিগ্রী অর্জন করেন। ভালো পড়ানোর কারনে তিনি বিদ্যালয়ের ছাএ ছাএীদের প্রিয় শিক্ষক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।
শিক্ষক সুজন দত্ত বলেন, শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। টাকা দিয়ে যে পেশার মূল্যায়ন করা যায় না। তিনি আগামী দিনের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্ঠা করছেন।