মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা
গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত আগ্রাসন, দখলদারিত্ব এবং ফিলিস্তিনের নিরপরাধ নারী-শিশুসহ সাধারণ মানুষের উপর চালানো গণহত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার অন্যতম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ-এ।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ১১টায় কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এবং কলেজ প্রশাসনের সহায়তায় আয়োজিত এ কর্মসূচির সূচনা হয় কুমিল্লা-মিরপুর সড়কের পাশে কলেজের মূল ফটকের সামনের সড়ক অবরোধ করে এক বিশাল মানববন্ধনের মাধ্যমে। পরে সেখানে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে এবং শেষ হয় সিএনজি স্ট্যান্ড এলাকায় এক প্রতিবাদ সভার মাধ্যমে।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ মিছিলে অংশগ্রহণ করেন কলেজের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী। তারা ‘ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ করো’, ‘ইসরায়েলের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হোক বিশ্বজুড়ে’, ‘We Stand With Palestine’, ‘Stop Killing Innocent Children’ ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন পুরো এলাকা। শিক্ষার্থীদের কণ্ঠে ছিল ক্ষোভ, বেদনা আর প্রতিবাদের মিশ্র ধ্বনি।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, “ফিলিস্তিনে ইসরায়েল সরকার যে বর্বর হামলা চালাচ্ছে তা মানবতার চরম লঙ্ঘন। নিরপরাধ শিশু, নারী ও সাধারণ মানুষদের নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। অথচ জাতিসংঘ নীরব। মুসলিম বিশ্বও চুপ করে আছে। আমরা এই অন্যায়ের তীব্র নিন্দা জানাই।”
তারা আরও বলেন, “বাংলাদেশ স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছে, আমরা বীরের জাতি। তাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে চুপ করে থাকবো না। আমাদের এই প্রতিবাদ বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিক।”
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ মো. আলতাফ হোসেন। তিনি বলেন, “আমাদের শিক্ষার্থীরা আজ যেভাবে মানবিক মূল্যবোধ থেকে ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়িয়েছে, তা প্রশংসার যোগ্য। বিশ্ব এখন নৈতিকতার দিক থেকে চরম সংকটে। এই পরিস্থিতিতে তরুণ প্রজন্মের এমন জাগরণ আশার আলো দেখায়।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কলেজের সহকারী অধ্যাপক মানস কুমার রায়, মো. কবির আহমেদ, মো. হুমায়ুন কবির, মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং সিনিয়র প্রভাষক শরীফ মো. রেজা, মো. শহিদুল ইসলাম, মো. মাহবুবুর রহমান লিটন, মো. জামাল হোসাইন, মো. নেছার আহাম্মেদ, সুমন রানা প্রমুখ। তাঁরা সবাই শিক্ষার্থীদের এই মানবিক প্রতিবাদে সম্পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করেন এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের পক্ষে সোচ্চার হতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা শুধু তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়াই নয়, বরং তা ছিল ন্যায়বোধ, নৈতিকতা ও মানবতার পক্ষে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের এক সাহসী অবস্থান। ফিলিস্তিনের জনগণের পাশে দাঁড়ানো মানেই বিশ্ব মানবতার পক্ষে দাঁড়ানো—এই বার্তাই পৌঁছে দিলেন ব্রাহ্মণপাড়ার শিক্ষার্থীরা।