আশুলিয়ায় খোলা ড্রেনে লেগুনা পড়ে মর্মান্তিক মৃত্যু ২ পোশাক শ্রমিকের, আহত ৩

মোঃ আল আমিন, আশুলিয়া

আশুলিয়া, ১৬ এপ্রিল:
রাজধানীর উপকণ্ঠ আশুলিয়ায় দীর্ঘদিনের ড্রেনেজ সমস্যার কারণে ঘটলো আরেকটি প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। খোলা ড্রেন ও জলাবদ্ধতার কারণে বুধবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জামগড়া ফ্যান্টাসি কিংডম পার্কের সামনে বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কে যাত্রীবাহী একটি লেগুনা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। নির্মাণাধীন খোলা ড্রেনে পড়ে গিয়ে প্রাণ হারান দুই পোশাক শ্রমিক, আহত হন আরও তিনজন।

নিহতদের পরিচয়:

১. মো. বদরুল আলম গাজী হাবীব (৩৮) – সুপারভাইজার, এনভয় গার্মেন্টস
২. মো. হৃদয় মিয়া (৩৫) – সিনিয়র অপারেটর, ইউনিমাস ক্যাপ ফ্যাক্টরি

আহতদের পরিচয়:

৩. বিলকিস (৩০)
৪. সুব্রত পাল (৩২)
৫. নূরুল ইসলাম (৫০)

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রাস্তায় পানি জমে যায় এবং রাস্তা ও ড্রেনের সীমারেখা অস্পষ্ট হয়ে পড়ে। ফ্যান্টাসি কিংডম পার্কের সামনে জমে থাকা পানির নিচে ড্রেনটি ঢাকা পড়ে যাওয়ায় লেগুনাটি ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যায় ড্রেনের মধ্যে।

স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে আহতদের আশুলিয়া নারী ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক বদরুল আলম ও হৃদয় মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।

অব্যবস্থাপনার চিত্র:

এলাকাবাসী জানান, জামগড়ার প্রধান পানি নিষ্কাশনের খাল ‘নয়ন জলি’ দখল হয়ে যাওয়ায় বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। খোলা ড্রেনগুলোতে কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই, নেই সতর্কতামূলক চিহ্নও। ফলে সাধারণ মানুষের জীবন প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মুখে পড়ে।

প্রশাসনের ভূমিকা:

ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালায়। দুর্ঘটনায় ব্যবহৃত লেগুনাটি জব্দ করা হয়েছে এবং চালক ও হেলপারকে আটকের চেষ্টা চলছে। এখন পর্যন্ত কেউ নিখোঁজ রয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করা যায়নি। তবে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সতর্কভাবে তল্লাশি চালিয়েছে।

জনদাবি:

এ ঘটনায় এলাকাবাসী গভীর শোক প্রকাশের পাশাপাশি ক্ষোভও জানিয়েছেন। তারা অবিলম্বে নয়ন জলি খাল দখলমুক্ত করে আধুনিক ও নিরাপদ পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন।

এই দুর্ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বহীনতা কীভাবে নাগরিক জীবনকে মরণফাঁদে ঠেলে দিচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *