জয়দেবপুর থানায় অর্থের বিনিময়ে মিথ্যা তথ্যে ধর্ষণ মামলা নেয়ার অভিযোগে ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক

গাজীপুরের জয়দেবপুর থানায় অর্থের বিনিময়ে মিথ্যা তথ্যে ধর্ষণ মামলা নিয়েছে এমন অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে সুইটি আক্তার নামে একজন।
শুক্রবার(১৮ এপ্রিল) বিকালে গাজীপুর সদর প্রেসক্লাব কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ধর্ষণ মামলাটির আসামী ছানারুল ইসলামের স্ত্রী সুইটি আক্তার। এসময় ধর্ষণ মামলার আসামী ছানারুল ইসলামের বড় বোন ও নিকট আত্নীয়রা উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে সুইটি আক্তার বলেন, আমার স্বামীর প্রাক্তন স্ত্রী মানসুরা প্রচন্ড অর্থলোভী।।মানসুরা তার ভাইকে বিদেশ পাঠানোর জন্য আমার স্বামীর বড় বোনের জামাই ছানাউলের  কাছ থেকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ তারিখে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ৩ লক্ষ টাকা নেয়। এই টাকা চাইতে গেলেই তাদের ঝগড়া বিবাদ পরে তাদের মধ্যে ডিভোর্সও হয়। এরই মধ্যে মানসুরা আমার স্বামীর বাড়ি থেকে নগদ অর্থ,স্বর্ণালংকার ও ফার্নিচার চুরি করে নিয়ে যায় যার লিখিত অভিযোগও জয়দেবপুর থানায় করেন আমার স্বামী। মানসুরা বিভিন্ন সময় আমার স্বামীকে থানা পুলিশের ভয় দেখিয়ে ও সন্ত্রাসীদের নিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং করতো। তেমনি সর্বশেষ গত ৬ এপ্রিল আমাদের ভাড়া বাসায় (বাঘের বাজার,মাটির মসজিদ এলাকায়)  ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে আমাদের উপর আক্রমণ করে। তখন আমাদের বাড়িওয়ালা দেলোয়ার ৬ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭ টায় জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ (০১৭০৯৫১৯৭০৯ নাম্বার থেকে)ফোন করে হামলার কথা জানায়। জয়দেবপুর থানা থেকে পুলিশ আসতে দেরি হওয়ায় জয়দেবপুর থানার ওসিকেও ফোন করা হয়।  এরপর রাত ১০ টার দিকে এসআই নজরুল ইসলাম ফোর্সসহ আমাদের ভাড়া বাড়িতে আসেন।
পরে মানসুরার দাবিকৃত ৫০ হাজার টাকা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি,বাড়িওয়ালা, সাংবাদিক ও পুলিশের উপস্থিতিতে ৪০ হাজার ও পরে ১০ হাজার এই মোট ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়। এই টাকা নিয়ে পরবর্তীকালে সে কোন ধরণের থানা পুলিশের ঝামেলা বা ব্ল্যাকমেইলিং করে ক্ষতি করবে না এমন কথা বলেন মানসুরা (যার ভিডিও রয়েছে)। কিন্তু পরিতাপের বিষয় মানসুরার অভিযোগের ভিত্তিতে কোনরূপ  তদন্ত ছাড়াই পুলিশ আমার স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা নেয়। মামলায় যেই সময়ের কথা উল্লেখ রয়েছে অর্থাৎ ৬ এপ্রিল সে দিন সন্ধ্যা থেকে রাত দুইটা পর্যন্ত আমরা বাড়িওয়ালা, সাংবাদিক ও পুলিশ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে আমরা আমার স্বামীসহ বিচারে ছিলাম এবং রাত দুইটায় ৪০ হাজার টাকা দেই যার ভিডিও রয়েছে। মামলায় উল্লেখিত স্থানটিও সঠিক নয়। ধর্ষণ মামলায় উল্লিখিত সময় অর্থাৎ ৬ এপ্রিল আমরা জাতীয় জরুরী সেবায় সন্ধ্যা ৭ টায় ফোন করলে জয়দেবপুর থানা থেকে পুলিশ রাত ১০ টায় আমাদের বাসায় উপস্থিত হয়। এখন আপনাদের মাধ্যমে আমার সচেতন মহলের কাছে প্রশ্ন বিচারের মধ্যে থাকার সময় কিভাবে আমার স্বামী ধর্ষণ করলো এবং এক স্থানে বিচার অন্য স্থানে কিভাবে গেল ধর্ষণ করতে? এখন বিভিন্ন লোক মারফত মানসুরা আমার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করছে। মানসুরা বলছেন থানায় মামলা করতে পুলিশকে টাকা দিতে হয়েছে  তাই এখন মোটা অংকের টাকা দিলেই সে মামলার আপোষ করবে অন্যথায় একই কায়দায় ওসি ও পুলিশের মাধ্যমে আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক উপর্যুপরি মামলা দিবে। এছাড়াও ধর্ষণের সময় দেয়া হয়েছে ৬ই এপ্রিল মানসুরা অভিযোগ দেয় ১১ এপ্রিল এবং এই ১১ তারিখেই পুলিশ কোনরূপ তদন্ত না করেই আমার স্বামীকে গ্রেফতার করেন। বর্তমান সময়ে ধর্ষণ মামলা আলোচিত ও সেনসিটিভ তাই কোনরূপ তদন্ত ছাড়া মিথ্যা তথ্যে টাকার বিনিময়ে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা নেয়ায় মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইজিপি স্যার ও গাজীপুরের পুলিশ সুপার স্যারের কাছে জয়দেবপুর থানার ওসি ও তদন্ত কর্মকর্তার বিচার দাবি করছি। সেই সাথে সুষ্ঠু তদন্ত করে ন্যায় বিচারের জানাচ্ছি।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের সরকার, আমি এই সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইজিপি স্যার,গাজীপুরের পুলিশ সুপার এর কাছে সুষ্ঠু ন্যায় বিচারের দাবি জানাচ্ছি। মিথ্যা মামলা ও যেকোনো সময় আমার উপর সন্ত্রাসী হামলার ভয়ে আমি মানবেতর জীবন যাপন করছি। তাই আমার জীবনের নিরাপত্তার পাশাপাশি মিথ্যা তথ্য দিয়ে ধর্ষণ মামলা করায় মানসুরার বিচার দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে ছানারুল ইসলামের বড় বোন অভিযোগ করেন,মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জয়দেবপুর থানার এসআই তোফায়েল ওসির কথা বলে ৩ লক্ষ টাকায় মামলাটি শেষ করবেন বলে জানিয়েছেন। 
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জয়দেবপুর থানার ওসি কোন জবাব না দিলেও গাজীপুর সদর সার্কেলের এএসপি লিপি রানি সিনহা খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *