সাভার উপজেলা প্রতিনিধি, মোঃ আল আমিন
আজ সাভারের রানা প্লাজা ধসের এক যুগ পূর্ণ হলো—একটি দিন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে রচিত হয়েছিল চোখে জল ও রক্তের অক্ষরে। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নয়তলা ভবনটি ধসে পড়লে মুহূর্তেই স্তব্ধ হয়ে যায় হাজারো পরিবার। এই ভয়াবহ শিল্প দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ১ হাজার ১৩৬ জন শ্রমজীবী মানুষ; আহত হন আরও প্রায় দুই হাজার।
দুর্ঘটনার পর দায়ের করা হয় চারটি মামলা। এর মধ্যে শুধুমাত্র সম্পদের তথ্য গোপনের মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। কিন্তু মূলত হত্যা এবং অবহেলার অভিযোগে দায়ের করা বাকি তিনটি মামলার বিচার এখনও চূড়ান্ত হয়নি।মামলার অগ্রগতির চিত্রও হতাশাজনক। ৫৯৪ জন সাক্ষীর মধ্যে গত ১২ বছরে মাত্র ৯৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বিচারপ্রক্রিয়ার এমন দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহতদের স্বজন ও শ্রমিক সংগঠনগুলো।
শ্রমিক নেতারা বলছেন, “১২ বছর কেটে গেলেও বিচার না হওয়া বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমাদের আস্থাকে দুর্বল করে। শ্রমিকের প্রাণের মূল্য কি এতটাই কম?”আইনজীবীরা বলছেন, মামলাগুলোতে সাক্ষীদের অনুপস্থিতি, আসামিপক্ষের সময় নেওয়া এবং প্রশাসনিক জটিলতার কারণে বিচার বিলম্বিত হচ্ছে।
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়, এটি শিল্প নিরাপত্তার প্রতি রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা এবং ন্যায়বিচারের প্রশ্নে এক গুরত্বপূর্ণ মাইলফলক।আজ সারা দেশের মানুষ যখন এই ভয়াবহ ঘটনার এক যুগ পূর্তিতে নিহতদের স্মরণ করছে, তখন বিচারের অনিশ্চয়তা নতুন করে ক্ষত জাগিয়ে তুলছে।