চোরাকারবারি সিন্ডিকেট শক্তিশালী করতে মরিয়া-ওসি মাহমুদুল হাসান

নিজস্ব প্রতিবেদক, দূর্গাপুর, নেত্রকোনা

নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে সীমান্ত চোরাকারবারি সিন্ডিকেটকে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে। তার পৃষ্ঠপোষকতায় নেত্রকোনার দুর্গাপুর সীমান্তে গড়ে উঠেছে দুর্ধর্ষ শক্তিশালী চোরাকারবারি সিন্ডিকেট।

সীমান্ত পথে অবৈধভাবে অবাদে ঢুকছে ভারতীয় পণ্য। দুর্গাপুর উপজেলার সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে নিয়মিত আনা হয় ভারতীয় চিনি, কম্বল, মাদক কসমেটিক কাপড় সহ বিভিন্ন পণ্য।

সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, চোরাচালানের জন্য দুর্গাপুর উপজেলার সীমান্তের বিজয়পুর, ভবানীপুর, ফারংপাড়া, বারোমারি,কালিকাপুর সহ বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ডুকছে এসব ভারতীয় পণ্য।

দুর্গাপুর শহরের বাসিন্দা রমজান আলীসহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন যে, ভারতীয় কম্বল, চিনি ও কসমেটিকসসহ আটক করে থানায় নিয়ে মামলা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মালামাল জব্দ করে মামলা না দিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়। ছাড়ার সময় এবিষয়ে কাউকে কিছু বললে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয় মাহমুদুল হাসান। গত ১১ মার্চ ২০২৫ তারিখে এসআই সুরাফ দুর্গাপুরের পানমাল হতে সাত বস্তা ভারতীয় চিনি সহ একটি আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আসামিদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার মামলা না দিয়ে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে সন্ধ্যায় ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

এভাবে ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের মালামাল জব্দ করে নিজের শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে দিয়ে সেসব পণ্য বিক্রি করে দেন। উল্লেখ্য, মাহমুদুল হাসানের শ্বশুর বাড়ি পূর্বধলা উপজেলার জারিয়া ইউনিয়নে। তার শ্বশুর ইউনুস আলী মন্ডল ও মামা শ্বশুর মজিবুর রহমান পূর্বধলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন তার চাচা শ্বশুর, পূর্বধলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও জারিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নান্টু তার
বউয়ের আপন বড় ভাই। এমনকি উপজেলা যুবলীগের সদস্য নাসির আহমেদ নাজিম তার বউয়ের চাচাতো ভাই। মূলত, শ্বশুর বাড়ি এলাকাতে একাধিক গোডাউন করে থানায় জব্দকৃত মালামাল সেখান তাদের মাধ্যমে ওসি মাহমুদুল বিক্রি করে।

এবছরের গত ৮ ই মার্চ ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর থানায় যোগদানের পর থেকেই চোরাকারবারি সিন্ডিকেট শক্তিশালী করতে মরিয়া হয়ে উঠে মাহমুদুল হাসান। চোরাকারবারিদের ধরে এনে মালামাল জব্দ করে, মোটা অংকের টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয় মাহমুদুল হাসান। পরে সেসব পণ্য তার শ্বশুর বাড়ির সিন্ডিকেট দিয়ে বিক্রি করে। যা থানার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করলে সহজেই বেরিয়ে আসবে বলে জানান একাধিক ভুক্তভোগী।

এবিষয়ে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান।

এব্যাপারে নেত্রকোণা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সাহেব আলী পাঠান জানান, তার বিরুদ্ধে এধরনের অভিযোগের প্রমাণ পেলে আমরা বিভাগীয় ব্যবস্থা নিব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *