ছাত্রীকে বিয়ে করে সমালোচনার মুখে শিক্ষক, বিক্ষোভে ফেটে পড়ল শিক্ষার্থীরা

জেলা প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে প্রলোভনে ফেলে বিয়ে করার ঘটনায় অভিযুক্ত হয়েছেন বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।

ঘটনাটি ঘটেছে গৌরীপুর উপজেলার সিধলা ইউনিয়নের বালিজুরি গ্রামে অবস্থিত কবুলেন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। অভিযুক্ত শিক্ষক মো. আজিজুল হক ওই বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক আজিজুল হক ২৫ মে রাতে বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী মাইমুনা আক্তারকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন। এ খবর জানাজানি হলে ২৭ মে (মঙ্গলবার) দুপুরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। তারা অভিযুক্ত শিক্ষককে দ্রুত বরখাস্ত ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানায়।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, “আজিজুল হক স্যার দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীটিকে নানা প্রলোভন ও মানসিক চাপে রাখছিলেন। অবশেষে সে তাকে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। এটি শুধু গুরুতর অনৈতিক কাজই নয়, একইসঙ্গে একটি বাল্যবিবাহও বটে।”

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে অন্য শিক্ষকদেরও কিছু সময়ের জন্য অবরুদ্ধ করে রাখে। তাদের অভিযোগ, বিদ্যালয়ে বহিরাগত ছেলেরা অবাধে প্রবেশ করে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে, যা শিক্ষক-প্রশাসনের নীরবতায় দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, “ছাত্রীর সঙ্গে শিক্ষক আজিজুল হকের বিয়ের বিষয়টি আমরা পরদিন জানতে পারি। এটি সম্পূর্ণ পারিবারিক বিষয়। বিদ্যালয়ে বহিরাগত প্রবেশ বা ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার অভিযোগও ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।”

ঘটনার পরপরই বিদ্যালয়ে ছুটে যান গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এম. সাজ্জাদুল হাসান। তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান এবং বলেন, “অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষকের বেতন বন্ধসহ সাময়িক বরখাস্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছাত্রীদের কে বিভিন্ন ধরনের দিকনির্দেশনা দেন ও তাদেরকে শুধু পড়াশোনার মধ্যে মনোনিবেশ করার জন্য উপদেশ দেন। সোশ্যাল মিডিয়া টিকটক, ইউটিউব ও ফেইসবুক থেকে ছাত্রীদের সবাইকে দূরে থাকার ও নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার আহ্বান জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *