প্রস্তাবিত বাজেটে মধ্যবিত্তের স্বস্তি কোথায়-বেড়েছে শঙ্কা আর ব্যয়

মোঃ মকবুলার রহমান স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী

আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘিরে দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যে দেখা দিয়েছে নতুন উদ্বেগ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় তাদের জন্য তেমন কোনো প্রত্যক্ষ স্বস্তির বার্তা না থাকলেও, কর কাঠামোর পরিবর্তন এবং বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে শুল্ক ও ভ্যাট বৃদ্ধির কারণে জীবনযাত্রার খরচ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কালের কন্ঠের বরাত দিয়ে এমনটি জানিয়েছে বিবিসি বাংলা।

যদিও করমুক্ত আয়ের সীমা কিছুটা বাড়ানো হয়েছে, তবে ন্যূনতম করহার ৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে উন্নীত হওয়ায়, অনেক মধ্যবিত্ত ব্যক্তি আগের তুলনায় দ্বিগুণ হারে কর দিতে বাধ্য হবেন। এর ফলে তাদের হাতে ব্যয়যোগ্য আয় কমে আসবে, যা সরাসরি প্রভাব ফেলবে দৈনন্দিন জীবনের ওপর।

এছাড়া, বাজেটে যেসব পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের প্রস্তাব এসেছে, তার অনেকগুলোই মধ্যবিত্ত পরিবারের নিত্য ব্যবহৃত দ্রব্য। যেমন—এলইডি লাইট, খেলনা, ফ্রিজ, টেলিভিশন, এসি, ব্লেন্ডার, মশা-মাছি দমনের সামগ্রী এবং মোবাইল ফোন। এসব পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি মধ্যবিত্তের ব্যয়ের তালিকায় অতিরিক্ত চাপ তৈরি করবে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণির আয় গত কয়েক বছর ধরে স্থবির হয়ে আছে। অথচ বাসাভাড়া, চিকিৎসা, শিক্ষা, যানবাহনসহ প্রায় সব খাতে ব্যয় ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এতে করে ‘অসুবিধার মধ্যে থাকলেও কিছু বলার বা সাহায্য চাওয়ার সুযোগ নেই’—এই মানসিক ভারও বইতে হচ্ছে তাদের।

তবে বাজেটে কিছু ইতিবাচক দিকও রয়েছে। বিশেষ করে সঞ্চয়পত্র কেনার প্রক্রিয়া সহজ করার উদ্যোগ, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং কিছু কৃষিপণ্য ও খাদ্যদ্রব্যে কর হ্রাস—এসব উদ্যোগ কিছুটা হলেও স্বস্তি এনে দিতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি, টিসিবির কার্যক্রম আরও সক্রিয় করা এবং নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য নগদ সহায়তা চালু করা হলে খরচের চাপ কিছুটা লাঘব হতে পারে। পাশাপাশি, উচ্চ আয়ের মানুষদের ওপর প্রগতিশীল কর আরোপ এবং বিলাসপণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানো গেলে রাজস্ব আয় বজায় রেখেই মধ্যবিত্তদের উপর বোঝা কমানো সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *