
মোঃ মকবুলার রহমান
স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী
সদ্য কারামুক্ত যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি ও জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান গত ২ জুন (সোমবার) ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত মজলিসে শুরার বিশেষ অধিবেশনে তাকে শপথ পাঠ করান। দেশ টিভির অনলাইনে প্রকাশিত তথ্যে এমনটি জানা গেছে।
এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব। তিনি জানান, মজলিসে শুরার বিশেষ ভার্চুয়াল অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে এটিএম আজহারুল ইসলাম দলের নির্বাহী পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
তবে তার নির্দিষ্ট দায়িত্ব সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি দলটির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট জুবায়ের।
এর আগে, ২৮ মে মুক্তি পাওয়ার পর এটিএম আজহারকে নিয়ে বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন শুরু হয় যে, তিনি জামায়াতের পরবর্তী আমির হতে যাচ্ছেন। তবে দলের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এই সম্ভাবনা নাকচ করে দেন। তাদের মতে, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জামায়াতের আমির নির্বাচন হয় রুকনদের প্রত্যক্ষ ভোটে। বর্তমানে দায়িত্বে থাকা আমির ডা. শফিকুর রহমান ২০২৩-২০২৫ মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হওয়ায় তার মেয়াদ শেষ হবে ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৫। সে অনুযায়ী, চলতি বছরের শেষদিকে নতুন আমির নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
দলীয় সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে, এটিএম আজহারুল ইসলামকে দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র নায়েবে আমির পদেও বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। কারণ, বর্তমানে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির হিসেবে রয়েছেন তিনজন – সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান, সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এবং আনম শামছুল ইসলাম। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নায়েবে আমিরের সংখ্যা নির্ধারিত না থাকলেও ‘প্রয়োজনীয় সংখ্যক’ রাখার বিধান রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এটিএম আজহারুল ইসলামকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড ও বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড প্রদান করে। আপিলের পর ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ১৯ জুলাই তিনি রিভিউ আবেদন করেন। চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ তার শুনানির অনুমতি দেয়। দীর্ঘ শুনানি শেষে ২৭ মে আদালত তাকে সব অভিযোগ থেকে খালাস দেন। পরদিন ২৮ মে তিনি ঢাকা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে মুক্তি পান।