
(হরিপুর উপজেলা প্রতিনিধি: মিলন খান)
বাংলাদেশে আবারও করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে এবং নতুন দুটি উপভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নতুন করে তেরো জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের শরীরে ওমিক্রনের দুটি নতুন ধরনের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ইউরোপের কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট দুটি তুলনামূলকভাবে হালকা উপসর্গ সৃষ্টি করলেও সংক্রমণ ক্ষমতা অত্যন্ত বেশি হওয়ায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এটিকে নতুন ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে শনাক্ত হওয়া অধিকাংশ ব্যক্তি সম্প্রতি বিদেশ ভ্রমণ করে দেশে ফিরেছেন এবং বাকি ব্যক্তিরা তাদের সংস্পর্শে এসে সংক্রমিত হয়েছেন। রাজধানীর ধানমন্ডি মিরপুর বাড্ডা উত্তরা ও বসুন্ধরা এলাকাগুলোতে আক্রান্তদের অবস্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। বর্তমানে তারা স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আইসোলেশনে রয়েছে এবং তাদের সংস্পর্শে আসা অন্যান্য ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে
বিশেষজ্ঞদের মতে এই উপভ্যারিয়েন্টগুলোর উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে হালকা জ্বর শুকনো কাশি মাথাব্যথা শরীরে ব্যথা এবং স্বাদ ও ঘ্রাণের সাময়িক পরিবর্তন। যদিও উপসর্গগুলো পূর্বের তুলনায় তীব্র নয় তথাপি বয়স্ক ব্যক্তি ও দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্তদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে
সরকার পরিস্থিতি মোকাবেলায় কয়েকটি জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে আগত যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা এবং স্ক্রিনিং পুনরায় চালু করা হয়েছে। ঢাকাসহ বড় শহরের হাসপাতালগুলোতে করোনা ইউনিট সক্রিয় করা হয়েছে। করোনা টিকার বুস্টার ডোজ যারা এখনো গ্রহণ করেননি তাদের দ্রুত টিকা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন করোনা সম্পূর্ণরূপে নির্মূল হয়নি বরং এটি সময় ও পরিস্থিতি অনুযায়ী রূপ পরিবর্তন করে আবার ফিরে আসছে। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে যে সাধারণ জনগণের অসচেতনতা ও উদাসীনতা সংক্রমণের হারকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে ২০২০ ও ২০২১ সালে যখন দেশজুড়ে হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হয় এবং মৃত্যুবরণ করে তখন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সেই কঠিন পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি রোধে জনগণকে এখনই সচেতন হতে হবে
জনসাধারণকে মাস্ক পরা সাবান দিয়ে হাত ধোয়া হাঁচি কাশির সময় মুখ ঢেকে রাখা ভিড় এড়িয়ে চলা এবং উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে সরকারি উৎস ব্যতীত গুজব এড়িয়ে চলার অনুরোধ জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন করোনার এই নতুন ঢেউকে প্রতিহত করতে হলে এখনই প্রয়োজন সর্বস্তরে জনসচেতনতা এবং সম্মিলিত অংশগ্রহণ
বিশেষজ্ঞরা আরও সতর্ক করে বলছেন বর্তমানে সংক্রমণ সীমিত থাকলেও এটি যদি অগ্রাহ্য করা হয় তবে ভবিষ্যতে বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। অতএব করোনার নতুন উপভ্যারিয়েন্টের এই উপস্থিতি আমাদের জন্য একটি সময়োপযোগী সতর্কবার্তা। এখনই প্রয়োজন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সচেতনতা বৃদ্ধি এবং দায়িত্বশীল নাগরিকত্বের চর্চা
মোঃ মিলন খান
হরিপুর উপজেলা প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও
০১৮৩০৩০৩১৩১