ব্রাহ্মণপাড়ায় সাধারন জনগণের বক্তব্য স্বৈরাচারের দোসর কিভাবে বিআরডিবির চেয়ারম্যান হিসেবে বাহাল তবিয়তে আছেন

সেলিম রানা, স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা

কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণ পাড়া উপজেলার বিআরডিবির চেয়ারম্যান হিসেবে বহাল তবিয়তে আছেন থানা ছাত্রলীগের সাবেক  প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আওয়ামী লীগের সদস্য মোঃ আক্তার হোসেন। ৫ ই আগস্ট স্বৈরাচার শেখ  হাসিনা সরকারের পতনের পর অনেকে গাঢাকা দিলেও বিআরডিবির চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন খোলস পাল্টে নানা জনের উপর ভর করে এখনো বহাল তবিয়তে বিআরডিবির চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।  সাধারণ মানুষের প্রশ্ন যিনি ৫ই আগস্ট পর্যন্ত স্বৈরাচার সরকারের সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন তিনি আবার খোলস পাল্টে কিভাবে বাহ্মণপাড়ার  বিআরডিবির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। আক্তার হোসেন এর বিরুদ্ধে বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে জায়গা জমি নিয়ে মানুষের সাথে মামলা হামলার ব্যাপক অভিযোগ আছে।
জোরপূর্বক জমি দখল, ভুয়া দলিল সম্পাদন করাসহ নানা রকম অপরাধের মূল হোতা এই ভূমি দস্যু আক্তার। জানা যায়, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নে মৃত্যু   আবদুর রহমানের ছেলে আক্তার । নানা অপরাধের সাথে সে যুক্ত থাকলেও আক্তারের ভূমি দস্যুতার অত্যাচারে অতিষ্ঠ সদর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকার মানুষ। এলাকাবাসীর অভিযোগ ভুমিদস্যু আক্তার জাল দলিল, জাল খতিয়ান করে অসহায় ও হিন্দু পরিবারের জায়গা জমি জবরদখল করা তার প্রতিনিয়ত কাজ। ভুক্তভোগীরা এসবের প্রতিবাদ করতে গেলে প্রতিনিয়ত শিকার হোন কিশোর গ্যাং কর্তৃক হামলার শিকার।
জানা যায়, ভূমি দস্যু আক্তারের বিরুদ্ধে ভূমি দস্যুতার উপজেলা সহকারী (ভূমি), থানা ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে একাধিক অভিযোগ ও মামলা রয়েছে। এসব অভিযোগে দেখা যায় তার অপরাধের নানাচিত্র।
জানা যায়, এলাকায় ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে ভূয়া দলিলের মাধ্যমে জোরপূর্বক এবং মামলার ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে আসছে ভূমি দস্যু আক্তার। কয়েকটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জাল দলিল তৈরী, জাল খতিয়ান তৈরী করে সুযোগ বুঝে অন্যের জমি দখল করে নেওয়া। তার বিরুদ্ধে এসব অপরাধের একাধিক অভিযোগ হলেও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর আশ্রয়ে সে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠছে। এমনকি কোন কোন ভুক্তভোগী অসহায় হলে তাদের বাড়ি ছাড়া করার জন্য প্রতিনিয়ত হামলা-মামলা চালিয়ে হয়রানী করে সে । অনেক অসহায় ভুক্তভোগী এই আক্তার গং এর লোকদের সাথে পেরে উঠতে পারছেনা বলে জানায় অনেক ভুক্তভোগী।
সরজমিনে খোজ নিয়ে জানা যায়, সে এলাকার চিহ্নিত একজন ভূমিদস্যু। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলের ১৫ বছর ধরে এসব কাজ করে আসছে। তার সাথে রয়েছে আরো কিছু ভূমিদস্য । আক্তার ব্রাহ্মণপাড়া সদর বাজারে  জেলা পরিষদের উন্নয়নে একটি বহু তলা বিশিষ্ট মার্কেট নির্মাণ করে উপজেলা প্রশাসন আক্তার উক্ত সরকারি জায়গায় একটি মামলা দিয়ে বর্তমানে কাজ বন্ধ রেখেছে। তার হাত থেকে বাদ পড়েনি সরকারি জায়গাও। তার বিরুদ্ধে ভূমি অফিসে ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছেও রয়েছে বেশ কয়েকটি অভিযোগ।
দীর্ঘভূমি গ্রামে প্রবাসী মতিউর রহমান হেলাল নামের এক ভুক্তভোগী জানান, আমার পূর্ব পুরুষের সম্পত্তি আমাদের নামে সব ঠিক আছে এমনকি আমাদের নামে বিএস খতিয়ানও ঠিক আছে। এখন সে এসে বলে এই জায়গা নাকি তার। সে জোরপূর্বক বিজ্ঞ আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে এবং এ মামলায় ৫০ থেকে ৬০  পরিবারের নামে অভিযোগ করে সবাইকে রাস্তায় নামিয়েছে এই ভূমিদস্য আক্তার। তার হাত থেকে রেহাই পায়নি তার মা  ও ভাইয়েরা তাদের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা করেছে এবং তাদের জায়গা বিক্রি করে দেয়।  তিনি আরো বলেন আক্তারের কারনে সদর ইউনিয়নের দীর্ঘভুমি গ্রামের ৫০/৬০ পরিবারের কাছে সে জায়গা পায় এবং নিয়মিত হয়রানি ও ভয় ভীতি দেখাচ্ছে।
আরেকজন ভুক্তভোগী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, আক্তার নামে এই ভূমিদস্যু পুরো ব্রাহ্মণপাড়া  জায়গা সম্পত্তি পায় সে আমাদেরকে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে এ ছাড়াও তিনি বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বহু অপকর্ম ও ভুয়া দলিলের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ভুক্তভোগী নাইঘরের সাবেক  আলী আকবর চেয়ারম্যান জানান, আক্তার হোসেন থেকে জমি ক্রয় করে দীর্ঘ বারো-তেরো বছর ঘুরে লাঞ্ছনা শিকার হয়ে বর্তমানে উদ্ধার হয়েছেন। আনোয়ার হোসেন আনু সর্দার জানান, তার  অন্তত চল্লিশটি মামলা চলে কুমিল্লা আদালতে, কিছু লোক তাকে সহযোগিতা করে এই কাজ গুলো করিয়ে থাকে। আরেক ভুক্তভোগী জজু মিয়া জানান, তার মা এবং ভাই থেকে আমি ন্যায্য মূল্যে জমি ক্রয় করে আক্তার হোসেনের পিয়নশন মামলার স্বীকার হয়ে হয়রানির মধ্যে আছি। আমরা তার বিচার চাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *