
মোঃ মকবুলার রহমান
স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডাঙ্গারহাটে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত পথসভায় দলের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, “যে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের তরুণরা প্রাণ দিয়েছে, আমাদের দায়িত্ব সেই ব্যবস্থার মৌলিক সংস্কার নিশ্চিত করা। বর্তমান সরকার কোনো নির্দিষ্ট দলের নয়, বরং এটি গণ-অভ্যুত্থানের ফল এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতিতেই তাদের গঠিত হয়েছে। তাই অপ্রাসঙ্গিক ও বিভেদ সৃষ্টিকারী মন্তব্য থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে।”
সোমবার (২৬ মে) সকালে ডোমার উপজেলা থেকে শুরু হয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির দ্বিতীয় ধাপের অংশ হিসেবে ডাঙ্গারহাটে অনুষ্ঠিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও কর্মসূচিতে এনসিপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
সরকার ও নির্বাচন প্রসঙ্গে আলম বলেন, “হত্যাকারী হাসিনা ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য হাজারো মায়ের বুক খালি করেছে। বাংলার মাটিতে তার বিচার অনিবার্য। যতক্ষণ না সে বিচারের মুখোমুখি হচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেন দায়িত্ব হস্তান্তরের চিন্তা না করে।”
নির্বাচন নিয়ে তিনি মত দেন, “শুধু দ্রুত নির্বাচন নয়, প্রয়োজন নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন। এটি নিশ্চিত করতে হলে আগে বিচারব্যবস্থা এবং নির্বাচন ব্যবস্থার পুরো সংস্কার করতে হবে।”
সাবেক সংসদ সদস্যদের মনোনয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি অভিযোগ করে বলেন, “আমরা দেখেছি কিভাবে আগের এমপিরা টাকা দিয়ে মনোনয়ন সংগ্রহ করতেন। তারা জনগণের চেয়ে দলের প্রভাব কাজে লাগিয়ে ক্ষমতায় যেতেন এবং পরে জনসেবার পরিবর্তে ব্যক্তিস্বার্থ রক্ষা করতেন। নির্বাচনের সময় টাকা বিলিয়ে ভোট কিনতেন, আর পরে জনগণের পকেট কেটে অর্থ তুলতেন।”
তিনি বলেন, “এবারের নির্বাচনে দল নয়, প্রার্থীকে গুরুত্ব দিন। সেই মানুষটিই আপনাদের প্রকৃত প্রতিনিধি, যিনি জনগণের কল্যাণে কাজ করতে প্রস্তুত—তিনি যেকোনো দলের হোন না কেন, এমনকি প্রতীক ছাড়াও।”
চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান জানিয়ে সারজিস আলম বলেন, “অটো, ট্রাক, পিকআপ—সবখানে চাঁদাবাজি চলছে। যারা এসব করছে, তাদের কোনো দল নেই, শুধু স্বার্থ আছে। সময় এসেছে এই দানবীয় চক্রকে প্রতিহত করার।”
তিনি আরও বলেন, “একসময় চাঁদাবাজি শুধু জেলায় সীমাবদ্ধ ছিল, এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিটি উপজেলায়। এই সিন্ডিকেট যদি এখন প্রতিহত না করা হয়, ভবিষ্যতে তারা সমাজকেই জিম্মি করে ফেলবে।”
সভায় সারজিস আলমের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, যাদের মধ্যে ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, ড. আতিক মুজাহিদ, আলী নাছের খান, আবু সাঈদ লিওন, সাদিয়া ফারজানা দিনা এবং আসাদুল্লাহ আল গালিবসহ স্থানীয় নেতারা।